আফগানিস্তানকে বিদায় জানাতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির উন্নয়ন কর্মসূচির প্রধান বলেছেন, স্থানীয় নারীদের সংস্থার জন্য কাজ করতে দেওয়া নিয়ে তালেবানদের রাজি করাতে না পারলে মে মাসে আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মতো ‘হৃদয়বিদারক’ সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হচ্ছে জাতিসংঘ।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউএনডিপি প্রশাসক আচিম স্টেইনার জানিয়েছেন, চলতি মাসে স্থানীয় নারীদের জাতিসংঘের কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা তালেবান সরকারের সাথে আলোচনা করেছে। কিন্তু তা আশানুরূপ হয়নি।
তিনি বলেছেন, আমরা এখন যেখানে আছি সেখানে সমগ্র ব্যবস্থাকে একধাপ পিছিয়ে যেতে হবে এবং সেখানে কাজ করার ক্ষমতার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ আফগানিস্তানের জনগণকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
স্টেইনার বলেছেন, তালেবান আফগান নারীদের কিছু কাজে নিয়োজিত করার অনুমতি দিয়েছে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশটির অর্থনীতিতে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হলে নারীদের আরও বেশি কাজ করা প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালে দেশটির মাথাপিছু আয় ৩৫৯ ডলার যা ২০২৪ সালে ৩৪৫ ডলারে এ নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্টেইনার বলেন, তালেবান নীতির কারণে বেশিরভাগ নারীদের কর্মক্ষেত্রের বাইরে রাখা হয়েছে এবং আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে। আমি মনে করি এটিকে হৃদয়বিদারক ছাড়া অন্য কোনভাবে বলার উপায় নেই। যদি আমি কল্পনা করি, জাতিসংঘ আজ আফগানিস্তানে নেই তাহলে আমার সামনে লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী, বাবা-মায়ের ছবি ভেসে উঠবে যাদের খাবারের জন্য তেমন কোন কিছুই নেই।
তবে আশার কথা হলো, তালেবান নারীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ছোট ব্যবসায় নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে।
চলতি মাসে তালেবানরা মহিলাদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে যে, জাতিসংঘ মিশনে নিযুক্ত মহিলা আফগান কর্মীরা আর কাজ করতে পারবে না। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরও দাতা সংস্থাগুলো আফগানদের খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে কোনো দেশ তালেবানকে আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।