নড়াইলের তিনটি উপজেলার পাট বাজারে ভরা মৌসুমেও পাটের দাম ধস পড়েছে। এ বছর পাটের ভালো ফলনে লাভের আশায় বুক বাধলেও দাম পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন এ জেলার কৃষক। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য সুত্রে জানা গেছে , এ বছর জেলায় মোট ২৩ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যার বিপরীতে দুই লাখ ৭০ হাজার ১৪০ বেলপাট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ রবিবার(২৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায়, নতুন পাটে সয়লাব এখানকার হাটবাজার। জেলার সবচেয়ে বড় পাটের মোকাম বড়দিয়া, লোহাগড়া, লাহুড়িয়া,মাইজপাড়া, মিঠাপুরসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য কৃষক তাদের উৎপাদিত পাট নিয়ে আসছে। এ সব হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যাপক সমাগমে হাট কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তবে পাটের দর নিয়ে হতাশায় পড়েন কৃষক।
লাহুড়িয়া হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ পাট মণ প্রতি ১৬০০ থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা দরে কেনা বেচা হচ্ছে। তবে মানভেদে কিছু পাট ১৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তবে এ হাটে পাট বিক্রি করতে আসা কৃষক আজাদ মোল্যা বলেন, চড়া দামে ডিজেল, সার, শ্রম কিনে পাট ফলাতে গিয়ে এবার পাটের উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে।
এ দিকে নতুন পাট ঘরে উঠতে না উঠতেই বাজার পড়ে যাওয়ায় লাভ দূরে থাক খরচও ওঠা নিয়ে তারা শঙ্কায় পড়েছেন। এ অবস্থায় তারা বর্তমান উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজার দর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন।
লোহাগড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী সুজন ভুইয়া বলেন,বর্তমানে মিলে পাটের দর কমিয়ে দিয়েছে,তাছাড়া গত বছর পাট বিক্রি করে তাদের অনেক টাকা মিলে বাকি পড়েছে পাট মিলে নেওয়াও কমিয়ে দিয়েছে। ফলে পাট বাজার ধস পড়ে গেছে।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, নড়াইলে প্রধানত ভারতীয় জে আর ও ৫২৮ জাতের পাটের আবাদ হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বি জে আর আই তোসা পাট ৮ জাতের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার পাশাপাশি যথাযথ পরিচর্যা ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতায় এবার পাটের ভালো ফলনও হয়েছে। ফসলের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিক নানা চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাট চাষ সম্প্রসারণে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজার দর নিশ্চিত জরুরি বলেও তিনি অভিমত দেন ।