মেয়েদের বিশ্বকাপ জয়ের পর চুমু কাণ্ড নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে তুমুল বিতর্ক। রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসের দাবি, সম্মতি নিয়েই বিশ্বজয়ী ফরোয়ার্ড জেনিফার হারমোসোকে চুমু দিয়েছিলেন। যেই কারণে পদত্যাগ করবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন ৪৫ বর্ষী রুবিয়ালেস। তবে হারমোসো বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, চুমুতে তার কোনো সম্মতি ছিল না। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পরেছে।
এ ঘটনার জেরে এবার স্পেনের হয়ে স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডের ২৩ জনের সাথে আরও ৫৮ জন খেলোয়াড় ধর্মঘট ডাক দিয়েছেন। রুবিয়ালেস পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা জাতীয় দলের হয়ে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই রুবিয়ালেসকে বরখাস্ত করতে আইনি প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে স্পেন সরকার। ফিফাও শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
শুক্রবার আরএফইএফ-এর বিশেষ সভায় অনেকেই রুবিয়ালেসের পদত্যাগের আশা করেছিলেন। তবে সভায় ফেডারেশন সভাপতি জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। বলেছেন ‘আপনি কি মনে করেন ঘটনাটি এতটাই গুরুতর যে স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাসে সেরা ব্যবস্থাপনার পরও আমার সরে যাওয়া উচিৎ? আমি পদত্যাগ করছি না।’
“হারমোসো একটি পেনাল্টি মিস করেছিল। সব খেলোয়াড়দের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। সে এসে আমাকে মাটি থেকে উপরে তুলেছিল। আমরা প্রায় পড়ে যাচ্ছিলাম। পরে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরি। আমি তাকে বলেছিলাম, ‘ভুলে যাও পেনাল্টি, তুমি অসাধারণ, তোমাকে ছাড়া আমরা বিশ্বকাপ জিততাম না।’ সে বলল- ‘তুমি দারুণ।’ আমি বললাম ‘একটা চুমু?’ ও সে বলল- ‘হ্যাঁ’।”
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে হারমোসো দাবি করেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই লুইস রুবিয়ালেস তার বক্তব্যে যা যা দাবি করেছেন, বিশেষ করে সম্মতিসূচক চুমুর ব্যাপারটি নিয়ে বলতে গেলে, তার সাথে এই বিষয়ে কোনো কথাবার্তাই হয়নি। এগুলো মিথ্যা ও নিজের সুবিধার অন্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে যে সংস্কৃতি তিনি গড়ে তুলতে চান, এটি তারই অংশ।’
‘আমি এটি জানানোর প্রয়োজন অনুভব করেছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি, খেলাধুলা কিংবা যেকোনো কাজের জায়গায় অসম্মতির পরও কেউ যেন এমন আচরণের শিকার না হয়। ওই সময় নিজেকে অসহায় লেগেছিল, আবেগে পরিচালিত একজন যৌনতাবাদী মানুষের স্থান-কাল-পাত্র ভুলে যাওয়া আচরণ। এটাতে আমার কোনো সম্মতি ছিল না। সহজ ভাষায়, আমাকে সম্মান দেয়া হয়নি।’
হারমোসোর সেই বিবৃতির পরেই বিশ্বজয়ী দলের সদস্য এবং অন্যান্য খেলোয়াড়রা রুবিয়ালেসের পদত্যাগের দাবি তুলেন। এমনকি তিনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত স্পেনের হয়ে তারা না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।