ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভয়াবহ বন্যায় ঝুকিতে দক্ষিণ চট্টগ্রাম

ভয়াবহ বন্যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়াসহ আরো সাতটি উপজেলা পানির নিচে নিমজ্জিত। টানা পাঁচ দিনের ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢল আর অতিভারি বৃষ্টিতে আশপাশের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার আরো বিস্তৃতি ঘটেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ।ইতোমধ্যে আটকে পড়াদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে চন্দনাইশের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেল সড়কটি যেভাবে বিশাল বেড়িবাঁধের মতো উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে তাতে পানি নিষ্কাশনের জন্য দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত পরিমান ব্রিজ ও কালভার্ট। ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং বৃষ্টির পানি নেমে রেললাইনে পানি আটকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, চন্দনাইশ, দোহাজারী, সাতকানিয়ার কালিয়াইশ, ধর্মপুর, কেউচিয়া ও লোহাগাড়া এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

তবে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম চৌধুরী বলছেন ভিন্ন কথা।

তিনি বলেন, আমরা রেললাইনের প্রতি কিলোমিটারে দুটির বেশি কালভার্ট রেখেছি। এর বাইরে বড় সেতু আছে প্রায় ৩৯টি। রেললাইনের কারণে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে, এটা বলা যাবে না। আর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পানি ওঠে, এটা নতুন কিছু না।

প্রথমে তো মহাসড়কে পানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালেও হাশিমপুর বড়পাড়া পাঠানীপুল এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পানিতে ডুবে রয়েছে। এই ছাড়াও চন্দনাইশ, সাতকানিয়া এবং লোহাগাড়ার নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়কগুলো ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, রেললাইন নির্মাণ করলেও পানি নিষ্কাশনের তেমন ব্যবস্থাই নেই। ফলে দোহাজারী পৌরসভার উল্লাপাড়া, ঈদপুকুরিয়া, খানবাড়ি, সরকারপাড়া, জামিজুরী, চাগাচর, লোকমানপাড়ার পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়িতে বৃষ্টির পানি প্রবেশ  করে তলিয়ে গেছে।

অন্যদিকে, মাতামুহুরির ঢলে তলিয়ে গেছে চকরিয়ার নিম্নাঞ্চল। অনেক বাড়িতে তিন থেকে আট ফুট পর্যন্ত পানি প্রবেশ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও বলছেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার নতুন রেললাইনে পর্যাপ্ত সেতু ও কালভার্ট না করায় এখানে সব পানি জমে আছে। পানি এখান থেকে বের হতে পারছে না।

>>>  লক্ষ্মীপুরে চুরি মামলায় চেয়ারম্যানসহ নয় জন কারাগারে

সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ৩২২ মিলিমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের পর খেপুপাড়ায় ৩১৬ মিলিমিটার এবং বান্দরবানে ২৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এবার রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণেই এমন ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। বন্যার জন্য রেললাইনকে দায়ী করা ঠিক না। প্রথমদিকে কক্সবাজার রেললাইনের প্রতি কিলোমিটারে দুটি করে কালভার্ট রাখা হয়েছিল। এই হিসাবে ২০০টি কালভার্ট। আরো বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত দুই বছরে ৪৫টি অতিরিক্ত কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এখন মোট ২৪৫টি কালভার্ট আছে। এর বাইরে সাঙ্গু, মাতামুহুরী, বাঁকখালী নদীসহ বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় সেতু মিলে মোট ৩৯টি সেতু। সব মিলিয়ে প্রায় ২৮৪টি সেতু ও কালভার্ট রয়েছে। মহাসড়কে হয়তো সব মিলিয়ে ৫০টি ব্রিজ-কালভার্ট আছে এখানে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :