ঘূর্ণিঝড়ের ‘মিধিলি’ এর প্রভাবে বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলে বৈরি আবহাওয়া বইছে।ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ রুটের সকল ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের পাশপাশি আজ শুক্রবার(১৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই দমকা হাওয়াও বইছে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তার সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে রুপ নিয়েছে।
এতে করে পায়রা এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, সর্বশেষ সকাল ৯টার তথ্যানুযায়ী বাতাসের গতিবেগ ৮-১০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে বাতাসের গতিবেগ ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি। টানা বৃষ্টিপাতের কারনে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
বর্তমানে বরিশালের তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে রয়েছে।
এদিকে বৈরী এই আবহাওয়ার কারণে বরিশালের তথা দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ রুটের সকল ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)
আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ-এর উপ-পরিচালক ও বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নদী বন্দরে এমনিতে ২ নম্বর সংকেত থাকায় সকালে ৬৫ ফুটের নিচের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে এখন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় সম্ভাব্য আগাম সতর্কতা হিসেবে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চসহ সকল ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিভাগীয় প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ মোকাবেলায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র এরইমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেইসাথে ৬ হাজার ২৪৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়ের জন্য খোলা রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
জানা যায়, বিভাগের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার আশ্রয়কেন্দ্রেই প্রায় ১৩ লাখ মানুষ ও দেড় লাখের অধিক পশু আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া পশুদের জন্য বিভাগের ৫২টি মুজিবকেল্লাও প্রস্তুত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরিশালের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, বরিশাল বিভাগের ১ হাজার ৮৪৫ টি সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে আগে থেকেই। আর যে কোন ধরনের উদ্ধার কাজে বরিশাল বিভাগের ৫ জেলায় ৩২ হাজার ৫ শত জন সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন।
এছাড়া বিভাগে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) এর দেড় হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।