ঢাকা, রবিবার, ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বশেমুবিপ্রবি’তে ছাত্রলীগ নেতার মাদক সেবনের ভিডিও ভাইরাল

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মাদক সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় চরম বিব্রত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও সাধারন শিক্ষার্থীরা । বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কমিটিতে পদপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলম কে একটি – “১ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের” ভিডিও তে দেখা যায় তিনি অদ্ভুত এক রকমের মাদক সেবন করছেন। যা স্থানীয় ভাষায় “ স্যলুশন আঠা” নামে পরিচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায় – বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোন কমিটি না থাকলেও নিজেকে অঘোষিত সভাপতি হিসেবে দাবী করেন জাহাঙ্গীর আলম। ঝুনু গ্রুপ নামীয় স্থানীয় মাদক সিন্ডিকেটের সাথে যোগসাজসে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের খুচরা ব্যবসা করেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে এপিইসি বিভাগের ভর্তি হন কিন্তু বিভাগটি নাম পরিবর্তন করে ইটিই হলেও তার কোন পরিবর্তন হয়নি, বর্তমানে ইটিই বিভাগ বিলুপ্ত হয়ে ইইই বিভাগের সাথে মিশে গিয়েছে কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম ২০১৬ সালে বহিস্কার হওয়ার পরে আর পড়াশোনা না করায় তার নাম আর কোন বিভাগে নেই বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ২০১৬ সালে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার হন। তারপর থেকে পড়াশুনা না করলেও স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় অছাত্র জাহাঙ্গীর আলম মাদক ব্যবসার মতো নানান ধরনের অপরাধ পরিচালনা করে আসছেন। কিছুদিন আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাদক সেবনরত অবস্থায় তাকে সাধারন শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান।

ইলিয়াস হোসেন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান- “এর আগেও জাহাঙ্গীর মাদকসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঘোনাপাড়া মোড়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের হাতে ইয়াবা ও গাজা সহ ধরা পড়লে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায় । ওর জন্য গোবরার ছেলেগুলো ও মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে” ।

>>>  ৬৫ শতাংশ কোরবানির গরু বিক্রি শেষ

এমন কি ! জাহাঙ্গীর আলমের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারীর সাথে কথা বলে জানা যায় , শেখ রাসেল হলে বহিরাগত নিয়ে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় বিশ্ববিবিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক মোঃ ফায়েকুজ্জামান মিয়া – কে জাহাঙ্গীর আলম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করেন। এই বিষয় নিতে তোলপাড় সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও করে কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক চাপে তার অপরাধের বিচার করা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে অছাত্র বলে আখ্যায়িত করে দ্বায় এড়িয়ে যান।

এছাড়াও, নড়াইল জেলার লোহাগাড়া এলাকার জনৈক ইয়াকুব আলীর মেয়ে সাদিয়া শারমিন – কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে ৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন।

এমন নৈতিকস্খলনজনিত অপকর্মের পরে ও বহাল তবিয়াতে ঘুরে বেড়ান স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। যেটা সমাজের জন্য হুমকি ও রাজনৈতিক দলের জন্য আদর্শিক সংকটের কারন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :