চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের প্রায় ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মোঃ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বাসসকে বলেন, “এখন চূড়ান্ত টাচ চলছে কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সেপ্টেম্বরে টানেলটি উদ্বোধন করবেন।”
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরে বহুল প্রতীক্ষিত টানেলটি উদ্বোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রমিক এবং প্রকৌশলীরা দিনরাত কাজ করে চলছেন। ইতিমধ্যে টানেলের ৯৮ শতাংশ কাজের সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ২শতাংশ কাজ শীঘ্রই শেষ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, টানেলে তেমন বড় কোনো কাজ নেই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগস্টের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব। তবে কবে টানেলটি উদ্বোধন করা হবে সেটি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।”
এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করবেন”।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, টানেলটি আসলে চট্টগ্রামকে “দুটি শহরের সাথে এক শহর”-তে পরিণত করবে। এটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত হচ্ছে ও চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মাল্টিলেন টানেলটি সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরকে আনোয়ারা উপজেলার সাথে সংযুক্ত করবে, যা সরাসরি চট্টগ্রামের সাথে কক্সবাজারকে সংযুক্ত করবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুসারে,১১ মিটার ব্যবধানে দুটি টিউব তৈরি করা হয়েছে যাতে ভারী যানবাহনগুলি সহজেই টানেলের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে পারব।
টানেলের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩.৪০ কিলোমিটার এবং ৫.৩৫ কিলোমিটারের একটি অ্যাপ্রোচ রোডের পাশাপাশি একটি ৭৪০-মিটার সেতুর সাথে মূল শহর, বন্দর ও নদীর পশ্চিম দিকটিকে এর পূর্ব দিকের সাথে সংযুক্ত করেছে।
প্রকল্পের অংশ হিসেবে, মূল বন্দর নগরী এবং কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম পাশকে নদীর এবং আনোয়ারা উপজেলার ব্যাপক শিল্পায়নের সাথে যুক্ত করে মোট ৭৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
১৪ অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে থাকেন।
প্রকল্পটির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
টানেলটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়েকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত করবে ও দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। এই টানেলে যানবাহন চলবে ঘণ্টায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার বেগে।
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল।
বাংলাদেশ এবং চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে ও বাকি অংশের অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।