
রেহেনা বেগমের বয়স যখন ১৪ বছর, তখন তাঁর বাবা সাখায়াত হোসেন মোল্লা পরপারে চলে যায়। দরিদ্র পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা রেহেনার জীবন শুরু থেকেই ছিল কষ্টের। সাত বোন লালনপালন করতে গিয়ে তাঁর মা–বাবাকে প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হয়েছে। রেহেনার বিয়ে হয়ে যায় ২০ বছর বয়সে। তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকার সময় রেহেনাকে ফেলে রেখে চলে যান তাঁর স্বামীও। এর পর থেকে শুরু তাঁর জীবনের সংগ্রাম।
টিকে থাকতে রেহেনা মাঝে মাঝে ভিক্ষাও করেছেন। করেছেন রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ। এখন তিনি শাক বিক্রি করে তিন বেলা নিজের খাবারের ব্যবস্থা করে থেকেন। মেয়েকে এসএসসি পাস করিয়ে বিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। বর্তমানে শাকের উৎস কমে যাওয়ায় তাঁর কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ । কারণ, শাকই যে তাঁর রুটিরুজি ও বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বন।
রেহেনা বেগমের বাবার বাড়ি হচ্ছে পিরোজপুর সদর উপজেলার চলিশা গ্রামে। স্বামীর বাড়ি ছিল একই উপজেলার জুজখোলা গ্রামে। রেহেনা বেগমের বাবা সাখায়াত হোসেন মোল্লা ছিলেন একজন কৃষিশ্রমিক। সাখায়াতের সাত মেয়ের মধ্যে সবার ছোট হলেন রেহেনা বেগম। কিশোরী বয়সে বাবাকে হারানোর পর মা সহুরা খাতুন সংসারের হাল ধরেছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পিরোজপুর শহরের দামোদর সেতুর ওপর কথা হয়েছে রেহেনার সাথে। তিনি বলেন, প্রতিদিন বিকেলে সেতুর এক প্রান্তে ফুটপাতে বসে শাক বিক্রি করে থাকেন তিনি। গতকাল বিকেলে নিয়ে এসেছিলেন ১৬ মুঠি হেলেঞ্চাশাক। প্রতি মুঠি ১০-১৫ টাকা বিক্রি করেন। হেলেঞ্চা ছাড়া মাঝেমধ্যে কলমিশাক ও কচুর লতিও বিক্রি করে থাকেন তিনি। সড়কের ধারে, মানুষের বাড়ির আশপাশে ও পতিত জমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো শাক তুলে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন রেহেনা।
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব