
ঈদের পরে গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩৩৮টি ট্রিপের মাধ্যমে ১৭ হাজার ২৪৭.৬৩ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিজানুর রহমান।
আজ শনিবার (১ জুলাই) সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সার্বিক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানিয়ে থাকেন।
মিজানুর রহমান বলেন, কোরবানির বর্জ্য অপসারণ ২৪ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই শেষ করার নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়েছিল। আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি ও কর্মপরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের প্রথম দিনের বর্জ্য আমরা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এছাড়া আজ পর্যন্ত গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩৩৮টি ট্রিপের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এতগুলো ট্রিপে আমরা ১৭ হাজার ২৪৭.৬৩ টন বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এসব কাজের জন্য আমরা ৩৫০টি যান ব্যবহার করতে হয়েছে। বর্জ্য অপসারণে প্রায় দশ হাজার কর্মী মাঠে থেকে কাজ করেছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছিল পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ভ্যান চালক যারা বর্জ্য সংগ্রহ করে তাদের সংখ্যাও ছিল প্রায় তিন হাজার। বর্জ্য অপসারণের জন্য আরও প্রায় সাড়ে ৬০০ এর মতো কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল, কে কার আগে পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করবে। সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের ব্যবস্থাপনায় গাড়ি ও কর্মী প্রতিটি ওয়ার্ড ভেদে তারা নিয়োগ করেছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কর্মী কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে সংযুক্ত ছিল।
কোরবানির সময় ভারী বর্ষণ একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবুও সবার চেষ্টা এবং আন্তরিকতায় ঢাকা শহরের কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।
মিজানুর রহমান বলেন, ডিএসসিসির পক্ষ থেকে দশটি হাট পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে নয়টি অস্থায়ী ও একটি স্থায়ী হাট। ঢাকা দক্ষিণ সিটির পক্ষ থেকে আমরা মূলত তিনটি কাজ করেছি। এর মধ্যে হাট ব্যবস্থাপনা, জাতীয় ঈদগাহ প্রস্তুত করা ও কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এসব কাজ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন। এসব কার্যক্রমের নেগেটিভ-পজিটিভ যেসব দিক আমরা পেয়েছি, সেগুলোর সমন্বয় করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেন আগামীবারের কার্যক্রম এবারের চেয়েও আরও গতিশীল হয়ে থাকে।
ডিএসসিসির সিইও বলেন, কোরবানির বর্জ্য অপসারণ একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই কাজটি পরিচালনা করার জন্য মনিটরিং রুম থেকে সব নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। প্রায় সময়ে এই মনিটরিং রুমে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র বিভিন্ন পরামর্শ নির্দেশনা সরাসরি দিয়েছেন। এছাড়া যে ওয়ার্ডগুলোতে আগে বর্জ্য অপসারণের কাজ হয়ে গেছে সেই ওয়ার্ডগুলো থেকে কর্মী, পরিচ্ছন্নতার গাড়িগুলো আমরা পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডে পাঠিয়েছি যেন দ্রুততার সাথে এই কাজগুলো শেষ হয়ে যায়। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে যেসব হাট ছিল সে হাটগুলো আমরা গত ২৮ জুন রাত থেকে অপসারণের কাজ শুরু করেছি। এরইমধ্যে সেগুলোর বর্জ্যও অপসারণ করা শেষ হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কাদা মাটি হয়ে যাওয়ায় অনেক ভারী গাড়ি ঠিকমতো পৌঁছাতে পারেনি, কাজও করতে পারেনি ঠিকমতো। সেই কারণে এখানে কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব