আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে আগামী ১৪ জুন থেকে শুরু হবে ট্রেন অগ্রিম টিকিট বিক্রি  বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, এবারও সব টিকিট অনলাইনের মাধ্যমে  বিক্রি করা হবে। কাউন্টার থেকে কোনো আসনের টিকিট পাওয়া যাবে না। 

আজ মঙ্গলবার রেল ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।

আগামী ২৯ জুন ঈদ ধরে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। ঈদকেন্দ্রিক রেলের কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৪ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হচ্ছে। এবার পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট আলাদা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলরত সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টা থেকে বিক্রি করা শুরু হবে।

আর পূর্বাঞ্চলে চলাচলরত সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দুপুর ১২টা থেকে ছাড়া হবে। 

কর্ম পরিকল্পনায় হচ্ছে, ১৪ জুন পাওয়া যাবে ২৪ জুনের টিকিট। একইভাবে ১৫ জুন দেওয়া হবে ২৫ জুনের, ১৬ জুন ২৬ জুনের, ১৭ জুন ২৭ জুনের ও ১৮ জুন দেওয়া হবে ২৮ জুনের অগ্রিম টিকিট। ঈদ যাত্রার ট্রেনের ফিরতি অগ্রিম টিকিট ছাড়া শুরু হবে ২২ জুন থেকে।

সেই হিসাবে ২২ জুন দেওয়া হতে পারে ২ জুলাইয়ের টিকিট। যথাক্রমে ২৩ জুন ৩ জুলাইয়ের, ২৪ জুন ৪ জুলাইয়ের, ২৫ জুন ৫ জুলাইয়ের এবং ২৬ জুন ৬ জুলাইয়ের টিকিট ছাড়া হবে।

রেলের পূর্বাঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর এবং ঢাকা। আর পশ্চিমাঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা এবং কুষ্টিয়া।

এদিকে, ২৬ জুন রাত ১২টা থেকে ২৯ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

তবে কনটেইনার এবং জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ঈদের আগের পাঁচ দিন জয়দেবপুর এবং বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ঢাকামুখী (কমলাপুর) টিকিট বিক্রি করা বন্ধ থাকবে।

আট জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর প্রস্তাব

রেলের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৬ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরদিন থেকে পাঁচ দিন চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ পথে তিন জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রাম পথে।

ভৈরব এবং ময়মনসিংহ থেকে দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে শুধু ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে যাওয়ার জন্য। এই ছাড়া আরো দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন ঈদের আগে এবং পরে ছয় দিন চালানো হবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটের উদ্দেশে। এই ঈদকে কেন্দ্র করে এক জোড়া নতুন ট্রেনের যাত্রা শুরু হবে ঢাকা-চিলাহাটি-ঢাকা পথে। 

শুধু চার কাউন্টারে স্ট্যান্ডিং টিকিট

ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন ৩২ হাজার আসনে যাত্রী পরিবহন করা হবে। মোট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট দাঁড়িয়ে (স্ট্যান্ডিং টিকিট) যাওয়া যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা হবে। স্ট্যান্ডিং টিকিট পাওয়া যাবে শুধু ঢাকার কমলাপুর, ক্যান্টনমেন্ট এবং বিমানবন্দর ও গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশন থেকে। মাঝপথে বিরতি নেয় এমন কোনো স্টেশনের স্ট্যান্ডিং টিকিট পাওয়া যাবে না।

যুক্ত হবে অতিরিক্ত বগি, ইঞ্জিন

রেলের অবহিতকরণ সভায় অতিরিক্ত ইঞ্জিন এবং বগি যুক্ত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হচ্ছে, ঈদ যাত্রায় ৬৫টি অতিরিক্ত বগি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৪০টি মিটার গেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ২৫টি ব্রড গেজ বগি আনা হবে।

এই ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১০২টি মিলিয়ে সর্বমোট ২১৮ অতিরিক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।