লক্ষ্মীপুরে ঝগড়ার পরে ঘুমন্ত মহরম আলী মোহনকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রী দিলু বেগমকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আদালতে রায়ের সময় তিনি পলাতক ছিলেন। রায়ের এক মাস ১৫ দিন পর র্যাব তাকে শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় ফেনীর বিজয়সিংহ সার্কিট হাউস এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, স্বামী হত্যার ঘটনায় আসামি দিলুকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। কিন্তু তিনি পলাতক ছিলেন। আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরও করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দিলু ফেনী জেলার দক্ষিণ চন্ডিপুর গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, গত ১১ এপ্রিল স্বামী মোহনকে হত্যার দায়ে দিলুর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। একইসাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা এবং দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এই রায় দেন।
কিন্তু রায়ের সময় দিলু পলাতক ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ভিকটিম মোহন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের কালিদাসেরবাগ গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে। মোহন কাজের সুবাধে ফেনীতে থাকতেন। তিনি নেশা করতেন। এই নিয়ে স্ত্রী দিলুর সাথে তার ঝগড়া হতো।
ঘটনার দিন ২০১১ সালের ৩০ মার্চ রাতে তিনি ফেনী থেকে লক্ষ্মীপুরের বাড়িতে আসেন। ওই রাতে দিলুর সাথে তার ঝগড়া হয়। পরে পাঁচ বছরের মেয়ে তিশাকে নিয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে দিলু গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ঘুমন্ত মোহনকে হত্যা করে থাকে। ঘটনার রাতে মোহনের মা জাহানারা বেগম বাড়িতে ছিলেন না। রাত ১টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তিনি ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পান। মরদেহের বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন ছিল। পরদিন ৩১ মার্চ ভিকটিমের মা বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় হত্যা মামলার দায়ের করেন।
২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল জলিল আদালতে দিলুকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। প্রায় ১১ বছর পরপ মামলার রায় দেন আদালত।







