
রাজধানীর বঙ্গবাজারে ঘটা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ‘পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা’ এখনো না হলেও সেখানে বাঁশের ঘর তুলে বেচাকেনার কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন করে মার্কেট তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এই ধরনের বাঁশের ঘরেই ব্যবসা করতে চাচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে বঙ্গবাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগে যেই সাময়িক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারেননি। ফলে এবার তাঁরা বাঁশের ঘর তৈরি করে তার ওপর ত্রিপলের ছাউনি বসিয়ে ব্যবসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেখানকার কয়েক ব্যবসায়ী মিলে একসাথে ঘর তৈরি করছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ঈদুল ফিতরের আগে জানানো হয়েছিল যে বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঈদের পর পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেটা কীভাবে হবে, তার কোনো রূপরেখা দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে ঈদের আগে অর্ধেক ব্যবসায়ী চৌকিতে বসে ছাতা টানিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও তাতে তাঁদের কোন প্রকার সুবিধা হয়নি।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন যে, পুনর্বাসন কাজের যেহেতু কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না, তাই রোদ-বৃষ্টি থেকে রেহাই পেতে তাঁরা বঙ্গবাজারে বাঁশের ঘর তুলছেন।
গত ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারে আগুন লাগে ও সেখানকার মার্কেটগুলোতে কয়েক শ দোকান পুড়ে যায়। এরপর ঈদের আগে সেখানকার খুচরা ব্যবসায়ীরা অস্থায়ীভাবে চৌকি পেতে এবং ছাতা টানিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। তবে অতিরিক্ত রোদের কারণে তখন ক্রেতারা বঙ্গবাজারে আসেননি। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় সুবিধা করতে পারেননি।
ব্যবসায়ীরা এবার আগামী ঈদুল আজহার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দৈনিক স্লোগানের সাথে কথা বলার সময় তাঁরা এমন ধারণা প্রকাশ করেন যে সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় শিগগিরই এখানে নতুন মার্কেট না-ও হতে পারে। তাই আগামী শীতের মৌসুম বাঁশের অস্থায়ী দোকান বসিয়ে কোনোভাবে চালিয়ে দিতে পারলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
মোল্লা গার্মেন্টসের মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঈদের আগে খুচরা ব্যবসায়ীরা ছাতা টানিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু আমাদের মতো পাইকারি ব্যবসায়ীরা বসেননি। এখন আমরা বসার মতো একটা জায়গা করছি। যত দিন নতুন মার্কেট না হয়, তত দিনে এভাবেই ব্যবসা চালাতে হবে।’
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘যেহেতু নতুন মার্কেট করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই আশা করছি আগামী ছয় মাস, এক বছর এভাবে ব্যবসা করতে পারব।’ এই ব্যবসায়ী মনে করেন, ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে তিনি আবার নতুন করেই ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন।
আনিয়া প্যান্ট হাউসের বিক্রেতা আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আজই প্রথম ত্রিপলের ছাউনির নিচে মালামাল নিয়ে বসেছি। তবে সকাল থেকে এখনো কোনো ক্রেতাই পাইনি। ব্যবসা করা কঠিন হবে, সেই বাস্তবতা মেনেই আমরা নতুন করে শুরু করতে চাইছি। আশা করছি, পুরো মার্কেটে এভাবে দোকান তৈরি হয়ে গেলে কিছু ক্রেতা নিয়মিতভাবেই বঙ্গবাজারে আসবেন।’
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব