ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বন্ধুর অসুস্থতার নাম ভাঙ্গিয়ে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

রংপুরে রোড এক্সিডেন্টের শিকার হওয়া বন্ধুর চিকিৎসার খরচ যোগাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেদন করে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছে লিমন নামে এক শিক্ষার্থী। উক্ত ঘটনার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গত ২০ জুন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তার বাবা মারা যান। কিন্তু তিনি কোনোমতে প্রাণে বেঁচে আহত অবস্থায় বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হলে তার (রংপুরের) বন্ধু নিম্মেল, তার ট্রিটমেন্ট এর এবং রিপোর্টের ছবি তার বোনের কাছ থেকে নেয়। ছবি নেবার পর নিম্মেলের নেতৃত্বে আরও কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাহায্যের আবেদন চেয়ে একটি পোস্ট করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এবং রংপুরের বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে তারা টাকা তুলতে থাকে।
পরে ঘটনা জানতে পেরে ভুক্তভোগী লিমনের পরিবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু তারা কোনো টাকা পয়সা না দিয়ে উল্টো তাদের হুমকি ধামকি দিতে থাকে বলে জানান ভুক্তভোগীর বোন।
এ ঘটনায় সম্পৃক্ত লিমনের কয়েক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ‘টাকা পয়সার হিসাব সব নিম্মেলের কাছে আছে আর আমরা হাতে যা টাকা পেয়েছি সব নিম্মেলের হাতে দিয়েছি। সে আমাদের বলেছে যে লিমনের কাছে প্রতিদিন সে টাকা পাঠায়। এর বেশি কিছু আমরা জানি না।’

প্রতারণার প্রধান অভিযুক্ত নিম্মেল বলেন, ‘আমি কোনো টাকা তুলিনি। আপনাদের কাছে প্রমাণ থাকলে তা দেন। ওরা আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আলম মুকুল বলেন, ‘এ বিষয়ে ক্যামেরায় কথা বলা মতো সৎ সাহস আমার নেই। আর টাকা তোলার বিষয়টি অবগত। তবে কত টাকা উঠেছে এ বিষয়ে আমি জানি না।’

অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা যদি ১০০ টাকা তোলে তাহলে ত্রিশ টাকা তারা হয়তো নিয়েছে। আর ভুক্তভোগীর বোন মামলা করলে করতে পারে।’

>>>  ভালুকায় প্রাইভেটকার দিয়ে ডাকাতি, আটক ৪

তিনি আরও বলেন, ১৫ লাখ টাকার বিষয়টি মিথ্যা। তারা ১৫ লাখ তোলেনি যা তুলেছে তা হয়তো পাঠিয়েছে ভুক্তভোগীর কাছে। টাকার হিসেব আমার কাছে নেই। কত টাকা উঠেছে এবিষয়ে আমি অবগত নই। আর সার্টিফিকেট আটকানোর বিষয়টি ভিত্তিহীন।

এদিকে ভুক্তভোগীর বোন মাহিয়া মেজবান রিফা সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমরা সিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উল্টো উনি আমাদের বলেন যে আমার ভাইকে কলেজ থেকে বের করে দেবেন। দুর্ঘটনার পর আমার ভাই চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার স্কুলের যে বকেয়া বেতন হয়েছে সেটা পরিশোধ না করলে তার সার্টিফিকেট আটকিয়ে দেবেন, পাশাপাশি মামলার হুমকি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এ অবস্থায় আমি চাই, আমার ভাইয়ের নাম ভাঙিয়ে যারা এমন একটি জঘন্য কাজ করেছে, তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। যাতে ভবিষ্যতে আমাদের মতো ভুক্তভোগী আর কাউকে হতে না হয়।

ভুক্তভোগীর বোন মাহিয়া মেজবান রিফা আরও জানান, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ কোনো অভিযোগ গ্রহণ করেনি।

এদিকে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) নাজমুল কাদের সময় সংবাদকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি, পেলে অবশ্যই তা বিবেচনা করে গ্রহণ করব।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :