কুমিল্লার দেবীদ্বারে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জঙ্গলের খুপরিতে বাস করা চিরকুমার মুজিবুর রহমান (৬০) এখন হাসপাতালে ডাক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সোমবার (২৯ মে) দুপুরে ইউএনও নিগার সুলতানা তার এলাকা থেকে নিয়ে এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করিয়েছেন।

মুজিবুর রহমান জানান, তার বাবা মরহুম লাল মিয়া প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তার মাকে। এই সংসারে একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি।

প্রথম সংসারে দুই ভাই ফরিদুল ইসলাম এবং জহিরুল ইসলাম। তার বাবা লাল মিয়া রেলওয়েতে চাকরি করতেন। সৎভাই ফরিদুল আলম পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করতেন। মুজিবুর কাইচপুর মালেক জুট মিলে চাকরি করে সৎভাই জহিরুল ইসলামকে বিএ পাস করান।

সেই জহিরুল ইসলামই তার পৈতৃক সম্পত্তির ১০৫ শতাংশের মধ্যে ৮৫ শতাংশ জমি লিখে নেয়। তাকেও বাড়ি থেকে বের করে দেন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ২০০৭ সাল থেকে জঙ্গলে খুপরি বানিয়ে ঠাঁই নেন মুজিবুর।

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ১০ নম্বর গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের মাশিকাড়া গ্রামের উত্তরপাড়া মৌলভীবাড়ির পাশের জঙ্গলের ভিতরে মুজিবুরের খুপরি।

সম্প্রতি তার খুপরির বিষয়টি ভাইরাল হয়ে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসনের।

এই নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা মুজিবুর রহমানকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

উপজেলা স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান জানান, মুজিবুর রহমান বর্তমানে সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন। তবে কিছুটা শারীরিক দুর্বলতায় ভুগছেন।

পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে থাকবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে মুজিবুর রহমানকে। তার জন্য জেলা প্রশাসক স্যার টিনের বরাদ্দ দিয়েছেন। তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেই তার পৈতৃক জমিতে আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।