অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা রাজধানীর গাউছিয়া সুপার মার্কেটের অগ্নিনিরাপত্তা (ফায়ার সেফটি) নিশ্চিত করার জন্য জরুরি ২০টি সুপারিশ করেছে রাষ্ট্রীয় চারটি সংস্থা।
আজ রবিবার (২১ মে) জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স, তিতাস ও ঢাকা ওয়াসা সমন্বিতভাবে মার্কেট পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে এসব সুপারিশ জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য মালিক সমিতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে।
এরপর দুপুর সোয়া একটার দিকে গাউছিয়া মার্কেট দোকান মালিক সমিতির অফিস কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা চারটি সংস্থা গাউছিয়া মার্কেট সমন্বিতভাবে পরিদর্শন করেছি। আগেও এখানে পরিদর্শনের পর যেসব সুপারিশ দিয়েছিলাম তার অনেকগুলোই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে। আজকের পরিদর্শন শেষে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদির ঘাটতি পূরণসহ সর্বমোট ২০টি সুপারিশ জরুরিভিত্তিতে স্থাপন করার জন্য মালিক সমিতিকে বলা হয়েছে।
সুপারিশগুলো হচ্ছে—
১. এক্সিট সাইন/ইমারজেন্সি লাইট জরুরিভাবে সিঁড়ির পার্শ্বে স্থাপন করতে হবে।
২. জরুরি নম্বরসমূহ দৃশ্যমান স্থানে স্থাপন করতে হবে।
৩. কলপয়েন্ট সুইচ লাগাতে হবে।
৪. ফায়ার অ্যালার্ম এর বেল স্থাপন করতে হবে।
৫. ফায়ার পাম্প স্থাপন করতে হবে ও সেটি আন্ডারগ্রাউন্ড পানির ট্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।
৬. প্রতি ফ্লোরের জন্য ফায়ার হাইড্রেন্ট এর ব্যবস্থা (রাইজারসহ) স্থাপন করতে হবে।
৭. ফ্লোরভিত্তিক ডেলিভারি হোজপাইপ স্থাপন করতে হবে (২.৫ ইঞ্চি ডায়া বিশিষ্ট)।
৮. প্রয়োজন অনুযায়ী পানির রিজার্ভার (আন্ডারগ্রাউন্ড) ট্যাংকএর পরিমাণ বাড়াতে হবে।
৯. প্রতিটা ফ্লোরের জন্য পি এ সিস্টেম স্থাপন করতে হবে।
১০. সাব-স্টেশন এবং জেনারেটর রুমের জন্য ফায়ার ডোর স্থাপন করতে হবে।
১১. প্রয়োজনীয় ফায়ার এক্সটিংগুইসার (প্রতি ৫৫০ বর্গফুটের জন্য ০১ টি করে) স্থাপন করতে হবে।
১২. ছাদের দরজাকে সর্বদা খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৩. ফায়ার রেটেড ওয়াল ( সাব স্টেশন রুমে এবং জেনারেটর রুমে) স্থাপন করতে হবে ও ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৪. ফ্লোরভিত্তিক প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে।
১৫. জেনারেটর ও সাব-স্টেশন রুমের ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা ( ফায়ার সাফ্রেশন সিস্টেম) স্থাপন করতে হবে, রাবার মেট স্থাপন করতে হবে এবং ক্যাবলগুলোর আর্থিং নিশ্চিত করতে হবে।
১৬. করিডোর, চলাচলের পথ পরিষ্কার/বাঁধামুক্ত রাখতে হবে এবং সিঁড়িপথের দোকানগুলো অপসারণ করতে হবে।
১৭. বৈদ্যুতিক লাইনগুলো অনুমোদিত ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা মাঝে মাঝে চেক (পরীক্ষা) করতে হবে এবং বৈদ্যুতিক তারগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল বোর্ডের ভেতর দিয়ে নিতে হবে।
১৮. ইলেক্ট্রিক হিটার, ইলেক্ট্রিক ওভেন এবং কফিশপের দোকানগুলোর ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১৯. ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষিত ফায়ার ফাইটারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং মহড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
২০. ভবনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরিভিত্তিতে ফায়ার লাইসেন্স করতে হবে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো জরুরিভিত্তিতে (ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর হতে ফায়ার সেফটি প্ল্যান অনুমোদন করে) বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা ওয়াসার সহকারী প্রকৌশলী মিলন মজুমদার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী অশোক কুমার হালদার, গাউছিয়া মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. কামরুল হাসান বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা।
