কারও ভিসা নীতি, নিষেধাজ্ঞায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকে থাকবে না বলে উল্লেখ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কারও অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের গণতন্ত্রে কেন বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ হবে? আমরা বাইরের কারো হস্তক্ষেপে গণতন্ত্র, নির্বাচন চাই না।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশে আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি
এবং জামায়াতের ‘দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ভারতেও নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। সব দেশেই এমনটা হয়। বাংলাদেশে কেন প্রধানমন্ত্রীর পদে পরিবর্তন হবে? দুনিয়ার কোনো দেশে সংসদ ভাঙা হয় না। বাংলাদেশে কেন হবে? সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে নির্বাচন শেষ হলে। এর আগে সংসদ ভাঙবে না।

সংবিধানে যেভাবে আছে সরকার, সেভাবে চলবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারও পরামর্শে সরকার চলবে না। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক আসবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে তারা পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনেই নির্বাচনে যাচ্ছি। নির্বাচনের সময় আমাদের দেশে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো শেখ হাসিনাই থাকবেন।’

বিদেশিরা কোনো খুঁত ধরতে পারে না উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের যে প্রস্তুতি, এর মধ্যে কোনো ধরনের খুঁত নেই।’

গাজীপুর, বরিশাল এবং খুলনায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা নেই। মানুষের মধ্যে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই। দেশের জনগণ নির্বাচনের প্রতি আস্থাশীল রয়েছে।

বিএনপি এখন সব হারিয়েছে, এমন দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দলটির হাতে এখন আর কিছু নেই। তারা এখন ‘বেসামাল’ হয়ে পদযাত্রা করছে। এই পদযাত্রা শেষ পর্যন্ত পতনযাত্রায় রূপ নেবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিএনপির অনেক নেতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও দাবি করে থাকেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যতই লাফালাফি করেন, যতই চোখ রাঙান, আপনাদের দলের লোকেরা তলে তলে অনেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপিও আসবে, আরও অনেকেই আসবে। দলের অভাব নেই। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এ দেশে হবে। নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। সময় কারও জন্য অপেক্ষা করে না। যত ষড়যন্ত্রই করুক, নির্বাচন এই দেশে হবেই।’

খেলা তো হবেই, আরও জোরদার হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে কোয়ার্টার ফাইনাল, এরপর সেমিফাইনাল, শীতকালেই হবে ফাইনাল। কিন্তু বিএনপি এখনই ‘ফাউল শুরু করেছে’ বলে মন্তব্য করে থাকেন তিনি।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, সাত হাজার মাইল দূরে থেকে ষড়যন্ত্র করা যায়। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র সফল করা যায় না।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার,ও  স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাহুল হোসেন প্রমুখ।

যুবলীগের ‘শান্তি সমাবেশ’

১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বরে গতকাল বিকেলে ‘শান্তি সমাবেশ’ করে থাকে যুবলীগ। এই সমাবেশে সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির ‘মৃত্যু ঘটবে’।

আওয়ামী লীগের নেতারা পালাবেন না, বিএনপি পালাবে বলে সমাবেশে মন্তব্য করে থাকেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান।