সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে সৈনিক লীগের এক নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। আগামী বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় মাহাবুরকে সশরীর হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
রোববার অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু সাঈদ এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়া ওই সৈনিক লীগ নেতার নাম মাহাবুর রহমান ওরফে মাহাম। তিনি রাজশাহী জেলা সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক। গতকাল শনিবার রাতে নিজের ফেসবুকে মাহিয়া মাহিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ফেসবুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহির সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর ভিডিও প্রকাশ করেন মাহাবুর রহমান। গণমাধ্যম ও ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি অনুসন্ধান কমিটির নজরে এসেছে। ভিডিওতে ভবিষ্যতে নির্বাচনী প্রচারের সময় মাহিয়া মাহিকে জুতাপেটা, প্রচারণায় বাধাসহ যেকোনো ধরনের ক্ষতি করা হবে বলে জানানো হয়। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে মাহাবুর রহমান সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮–এর ১১ (ক) বিধি লঙ্ঘন করেছেন, যা নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হবে।
নোটিশে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে মাহাবুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার সময় সশরীর অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, হুমকি দেওয়ার ঘটনায় মাহিয়া মাহির পক্ষে তানোর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন তাঁর ফুপাতো ভাই জাহেদুল ইসলাম। থানায় দেওয়া অভিযোগে মাহাবুর রহমানের ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওর কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ভিডিও প্রকাশের পর মাহি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তানোর থানার ওসি আবদুর রহিম বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছেন। ইতিমধ্যে তা জিডি হিসেবে নথিভুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সৈনিক লীগ নেতা মাহাবুর রহমান বলেন, তিনি রাগে-ক্ষোভে ভিডিও ছেড়েছেন। এটা তার ব্যক্তিগত ভিডিও। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাহিয়া মাহি মিথ্যা কথা বলে সমালোচনা করছেন। কিন্তু নৌকার প্রার্থী তাকে নিয়ে একটিও মন্তব্য করেননি। এগুলো মানতে না পেরে তিনি ভিডিও করেছেন। তবে ভিডিওর শেষ দিকে তিনি ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
রাজশাহী-১ আসনে মাহিয়া মাহিসহ মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহি (ট্রাক), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নুরুন্নেসা (আম), জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির জামাল খান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ (ছড়ি), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের আল সামাদ (টেলিভিশন), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সামসুজ্জোহা বাবু (নোঙর), স্বতন্ত্র মো. গোলাম রাব্বানী (কাঁচি) ও স্বতন্ত্র মো. আখতারুজ্জামান (ঈগল)।
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব