ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষার মান কতটুকু মানসম্মত?

গুণগত শিক্ষা বা মানসম্মত শিক্ষা বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। এটি উন্নত বিশ্ব এবং উন্নয়নশীল বিশ্বেও শিক্ষাবিদদের মনোযোগ আকর্ষণ করে চলেছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো টেকসই উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে গুণগত শিক্ষার ধারণা ও গুরুত্ব বিশেষভাবে তুলে ধরেছে। ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছর সময়কে ‘জাতিসংঘ শিক্ষা দশক’ হিসাবে গণ্য করে ইউনেস্কো গুণগত শিক্ষার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, উপাদান ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে। এ সংস্থাটি গুণগত শিক্ষাকে টেকসই উন্নয়নে শিক্ষার পূর্বশর্ত হিসাবে গণ্য করেছে। ‘সবার জন্য শিক্ষা’ এবং ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমালা’ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের সঙ্গে গুণগত শিক্ষার বিকাশের সম্পর্ক রয়েছে বলে অনেকে মত প্রকাশ করেন। এ ক্ষেত্রে ইউনেস্কো দ্বিমত পোষণ করে বলেছে, শিক্ষার পরিমাণগত ও গুণগত বিকাশ একইসঙ্গে ঘটতে পারে।

বর্তমান সরকারের আমলে গত এক দশকে দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় বালক ও বালিকা উভয়েরই অংশগ্রহণের হার অভূতপূর্বহারে বেড়েছে এবং একইসঙ্গে বিদ্যালয়ের সংখ্যাও বেড়েছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষাধারার সঙ্গে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাধারাও প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি সাধনে এগিয়ে এসেছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বলা চলে, দেশে প্রাথমিক শিক্ষার পরিমাণগত বিকাশ অনেকখানি হয়েছে। তবে গুণগত তেমন উন্নয়ন ঘটেনি।
বর্তমান সরকার শহরকেন্দ্রিক শিক্ষার পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার প্রাথমিক শিক্ষার প্রতি সমানভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু বাস্তবিক ভাবে উপকূলীয় স্কুলগুলোতে দেখা যায় তেমন কোন মানসম্মত শিক্ষার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও সম্মানিত শিক্ষকগণের অনীহা রয়েছে। যার ফলে বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে পদক্ষেপগুলো বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে দেখা যায়, স্থানীয় সাংসদের দিক- নির্দেশনা উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষার কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা সরকারের কোন নিয়মনীতি না মানার কারণে উপকূলীয় এলাকার সরকারি স্কুলগুলোতে মানসম্মত শিক্ষা খুবই হতাশাজনক। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন স্কুল কেন্দ্রীক প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার মানে স্কুল বাজেট সঠিক ভাবে কার্যকর না হওয়া। ছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর এ যোগ্যতা অর্জনের মান অত্যন্ত হতাশাজনক। মাধ্যমিক শিক্ষার অবস্থাও প্রাথমিক শিক্ষার মতো। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে উপকূলীয় অঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভীষণভাবে পিছিয়ে রয়েছে এবং গুণগত শিক্ষা মূল্যায়নের সর্বজনীন কিছু নির্দেশক রয়েছে। এর ভিত্তিতে গুগণত শিক্ষা অর্জনে ও টেকসইকরণে কিছু সাধারণ পূর্বশর্ত পূরণ প্রয়োজন। এগুলো হচ্ছে- বৈষম্যহীন সমন্বিত শিক্ষা, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাক্রম, মানসম্মত ও পেশার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ শিক্ষক সমাজ, প্রয়োজনীয় সুযোগ দিয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতায় এনে ধরে রাখা, সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন, দুর্নীতি নির্মূল ও অপচয়রোধ এবং শিক্ষায় অধিক বিনিয়োগ। তবে শিক্ষার মান উন্নয়নে কতগুলো বিশেষ পূর্বশর্ত বিবেচনা অপরিহার্য। শর্তগুলো হচ্ছে- শিক্ষক, প্রশিক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান, নেতৃত্ব, শিক্ষাক্রম, শিক্ষণসামগ্রী, মূল্য যাচাই, শিক্ষা নীতি ও পরিকল্পনা, বহিস্থ প্রশাসন, অর্থায়ন ইত্যাদি। এসব পূর্বশর্ত পূরণের ওপর নির্ভর করে গুণগত শিক্ষার মাত্রা।

>>>  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল

সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন, দৈনিক স্লোগান

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :