রাজধানীর হাতিরঝিলের পানিতে লাফিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যার নেপথ্যে মায়ের সাথে অভিমান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (২২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ প্লাজা সংলগ্ন ব্রিজ থেকে পানিতে লাফ দেন রিয়া। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত রিয়া দুদিন আগে বাসা থেকে বের হয়ে থাকে।

এরপর তার এক বান্ধবীর সাথে বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। সাথে থাকা বান্ধবীকে ভাটারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় আটক করা গেলেও রিয়াকে পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রিয়ার বান্ধবী আনিলাকে আটকের খবর পেয়ে মায়ের সাথে যোগাযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে রিয়া। এক পর্যায়ে হাতিরঝিল এলাকায় রিয়ার সন্ধান পাওয়া যায়।

তাকে বাসায় ফিরিয়ে নিতে মা হাতিরঝিল আসছে বুঝতে পেরে পানিতে লাফ দেন রিয়া। তাকে বাঁচাতে পাশে থাকা এক হাওয়াই মিঠাই ব্যবসায়ীও পানিতে লাফিয়ে পড়েন। কিন্তু ততক্ষণে পানিতে তলিয়ে যান রিয়া। নিহত রিয়া ভাটারা থানার নুরের চালা এলাকায় পরিবারের সাথে বাস করত।তার বাবা স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে কাজ করে।

আজ রবিবার (২৩ জুলাই) সকালে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ  মো. আওলাদ হোসেন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় রিয়া তার এক বান্ধবীকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে থাকে। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। তাদের দুজনই এসএসসি পরীক্ষার্থী। গতকাল শনিবার তার মা তাকে সর্বশেষ বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকায় দেখে।

কিন্তু সে মাকে দেখে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শনিবার রাতে রিয়ার মা থানায় এসে বিস্তারিত জানালে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দেখতে পাই তাদের অবস্থান বনানী এলাকায় ছিল।

তিনি আরো বলেন, রিয়ার সাথে থাকা বান্ধবীর বাসা শাহজাদপুর এলাকায়। তার বাবা একজন প্রবাসী। শাহজাদপুর এলাকায় তার এক খালার সাথে থাকত। পরে তাকে বাসা থেকে ভাটারা থানায় নিয়ে আসা হয়। এই সময়ে সে ফোনে তাকে থানায় আনার বিষয়টি একজনকে জানায়। বিষয়টি রিয়াও জানতে পারে। পরে হাতিরঝিল এলাকায় হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করা এক হকারের মোবাইল থেকে তার মাকে ফোন করে তাকে খোঁজার কারণ জানতে চায় এবং বান্ধবীকে আটক করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে। তার বান্ধবীকে আটকের কারণ জানতে চায়।

রিয়ার মা হাওয়াই মিঠাই ব্যবসায়ীকে অনুরোধ করেন, তার মেয়েকে যেন কিছুসময় দেখে রাখেন। বিষয়টা বুঝতে পেরে হাতিরঝিল ব্রিজ থেকে পানিতে লাফ দেয় রিয়া। পরপর হাওয়াই মিঠাই দোকানিও পানিতে লাফ দেন। কিন্তু ততক্ষণে পানিতে তলিয়ে যান রিয়া। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে তার লাশ উদ্ধার করে।