ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শীতকালীন রোদ আরামদায়ক কিন্তু বিপদজনক ও বটে

শীতকালীন হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডাকে সবাই ভয় পাই। তাই একটু আরামের জন্য সুযোগ হলেই আমরা রোদে গিয়ে একটু উত্তাপ নেওয়ার চেষ্টা করি। শরীরের জন্য শীতের রোদ আরামদায়ক হলেও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।

কেননা, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতের রোদে ক্ষতিকর প্রভাব বেশি থাকে। প্রখরতা কম থাকায় শীতের রোদে সবাই একটু বেশি সময় কাটিয়ে থাকে। ফলে এসময় ত্বকের ক্ষতিও বেশি হয়।

শুধু সকালেই নয়, শীতকালে দুপুর কিংবা বিকালেও অনেকে গায়ে রোদ লাগাতে পছন্দ করেন বা গায়ে রোদ মেখে আরাম পান।এ সময় প্রায়ই দেখা যায় মানুষজন রিকশার হুড না তুলে পথ চলছে। রাস্তায় রোদের মধ্যে পথচারীদেরও পথ চলতে তেমন সংশয় থাকে না।

শীতে এসব দৃশ্যের পেছনে কারণ একটাই, আর তা হচ্ছে শীতের মিষ্টি রোদ থেকে উষ্ণতা গ্রহণের আকাক্ষা।

তবে এখানেই লুকিয়ে থাকে বিপদ। অতিরিক্ত সময় রোদে থাকলে ত্বক শুষ্ক ও কড়া হয়ে যায়। বেড়ে যায় স্কিন ক্যানসারের সম্ভাবনা। আসলে শীতকালে পৃথিবীর বাইরে থাকা ওজন স্তরের লেয়ার পাতলা হয়ে যায়। অতিবেগুনি রশ্মি বেশি পরিমানে গায়ে লাগে এ সময়। তার উপর আবার শীতকালে ত্বকে মেলানিন উত্‍পাদন কমে যায়। ফলে, অতিবেগুনি রশ্মির রেডিয়েশন বেশি পরিমাণে পড়ে ত্বকের উপর। এমনটাই জানান ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায়।

তাঁর পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায়, শীতকালে বেশিক্ষণ রোদে থাকলে ত্বক স্বাভাবিক রং হারায়, বলিরেখা পড়ে, পুরু হয়ে যায়। মৃদু আঘাতে কালশিটে দাগ পড়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে স্কিন ক্যানসার পর্যন্ত হয়।

এ তো গেল ত্বকের ক্ষতি মাত্র। হার্টের বা রক্তচাপের রোগীদের দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থাকা প্রাণঘাতক ও হতে পারে। ত্বকে যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, কিংবা গায়ে জ্বর থাকে, তবে রোদ পোহানো যাবে না।

শীতের সকাল

সূর্যস্নান করতে চাইলে সে সময় অবশ্যই মাথায় ভিজে তোয়ালে বা গামছা রাখা উচিত্‍। তবে ২০-২৫ মিনিটের বেশি ‘সানবাথ’ একদমই নয়।

>>>  এডিস মশার বড় প্রজনন স্থল রোহিঙ্গা শিবির

মানা জরুরি আরও কিছু নিয়ম। যেমন, ভরা পেটে কোনোভাবেই সূর্যস্নান নয়। ঘণ্টা দু’য়েক আগে খাওয়া সেরে নিতে হবে। এমনটাই জানালেন নেচারোপ্যাথি বিশেষজ্ঞ ডা. অমরেন্দ্রনাথ দাস।

তাঁর মতে, সূর্যস্নানের অনেক উপকারিতা রয়েছে। পরিমিত রোদ গায়ে লাগালে শরীর সতেজ থাকে। চনমনে হয় মন। কর্মক্ষমতা বাড়ে। বাড়ে রক্তসঞ্চালন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ভাল-খারাপ নিয়েই শীতের রোদ্দুর। বিদেশে স্কিন ক্যানসারের জন্য ‘রোদ পোহানো’ অনেকাংশেই দায়ী। চামড়া ট্যান করার নেশায় বিদেশিরা দীর্ঘক্ষণ স্বল্প পোশাকে রৌদ্রস্নান করেন। এ দেশে অবশ্য স্কিন ক্যানসারের রোগী হাতেগোনা। তবু সাবধানের মার নেই। দীর্ঘক্ষণ টানা রোদে না বসাই ভাল।

ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময় বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় অতিবেগুনি রশ্মি সহজেই ত্বকের সংস্পর্শে পৌঁছে যায়। জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বছরের অন্য সময় আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির তেজ অনেকটা কমে যায়। শীতে সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শে আসে। ত্বকের ক্ষতিও বেশি হয়। তাই পৌষ-মাঘ মাসের রোদ বিপজ্জনক। ত্বকের সজীবতা ও সফটবর্ণ ধরে রাখার জন্য শীতের সময় টানা রোদ এড়িয়ে চলাই ভাল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :