
ইউরেশিয়া খ্যাত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং মুসলিম অধ্যুষিত সিরিয়ার উত্তরে সোমবার ভোরে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প। গত এক যুগের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হিসেবে উল্লেখ করছেন ভূতত্ত্ববিদ ও বিশেষজ্ঞরা।
ভূকম্পনবিদরা বলছেন, এক যুগের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের ফলে তুরস্কের আনাতোলিয়া থেকে আরব ভূখণ্ড পর্যন্ত মাটির তলদেশে প্রায় ১০০ কিলোমিটারের মতো দীর্ঘ ফাটল তৈরি হয়েছে। মাটির নিচে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে এবং এর প্রভাব কী বা কেমন, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন তারা। উল্লেখ্য, ভূমিকম্পের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় দুই দেশে মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিবর্গ। তুরস্কে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৯৪ জন এবং সিরিয়ায় ১ হাজার ৯৩২ জন বলে নিশ্চিত করেছে দুই দেশের প্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষ। তারা আরও জানান যে, প্রায় ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
সোমবার ভোরে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে গাজিয়ান্তেপ প্রদেশের নুরগাদি শহর থেকে প্রায় ২৬.৫ কিলোমিটার পূর্বে এবং ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১৮.৫ কিলোমিটার গভীরে অর্থাৎ ইস্ট আনাতোলিয়া ফল্টে। ফল্ট কথাটি দ্বারা মাটির নিচে পাথর ও অন্যান্য খনিজের বিশালাকৃতির স্তুপকে বোঝায়। যার ফলে অনমনীয় এই টেকটোনিক প্লেটগুলো চলমান অবস্থায় থাকে।
ইস্ট আনাতোলিয়া ফল্টে ফাটলের দরুন সৃষ্ট কম্পনগুলো উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে বেশি প্রবল ছিল। যার ফলে তুরস্কের মধ্যাঞ্চল থেকে সিরিয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রিটিশ সার্ভেয়ার রজার মুসন বলেন, 'গত শতাব্দীতে ইস্ট আনাতোলিয়া অঞ্চলের ফল্টের তেমন গতিবিধি লক্ষ্য করা যায় নি এবং ১৯৭০ সাল থেকে এখন অবধি এই এলাকায় তিনবার রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু এখন থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে অর্থাৎ ১৮২২ সালে এই অঞ্চলে প্রায় ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ২০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব