কয়েক বছর পর আবারো হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির প্রথমদিনেই রাজধানীসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষ হয়েছে। একজন নিহত হওয়া ছাড়াও আহত হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক।
আহতদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছাড়াও রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং সাংবাদিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোথাও কোথাও অতিরিক্ত পুলিশ এবং বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে নিহত হয়েছেন কৃষক দলের এক কর্মী। সেখানে আহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এছাড়া খাগড়াছড়ি, বগুড়া, ফেনী এবং কিশোরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষের তথ্য পাওয়া গেছে।
পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাঠে নামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। পদযাত্রার কর্মসূচির নামে এদিন মাঠে নামেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আর আওয়ামী নেতাকর্মীরা নামেন শান্তি সমাবেশ এবং মিছিলের কর্মসূচির উদ্দেশ্য নিয়ে।
পদযাত্রার প্রথমদিনে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ালে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় একটি মোটরসাইকেল এবং বাইসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।
এক দফা আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ঢাকার গাবতলী থেকে শুরু হয় বিএনপির এই পদযাত্রা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদযাত্রাটি মিরপুর টেকনিক্যাল মোড়ে পৌঁছালে নেতাকর্মীদের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারে একদল যুবক।
পদযাত্রায় অংশ নেয়া নেতাকর্মীরাও পাল্টা জবাব দিলে সেখানেই শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে পদযাত্রাটি আবারো নির্ধারিত পথে ফিরে যায়।
খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী। এছাড়া ওসিসহ আহত হয়েছেন তিন পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় শাপলা চত্বর এবং এর আশপাশের এলাকায় শুরু হয় সংঘর্ষ। চলে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। একপর্যায়ে বিএনপি কর্মীরা পৌরসভা কার্যালয়ে ঢুকে তাণ্ডব চালায়, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং পুড়িয়ে দেয়। পরে বিজিবি সদস্যরা মাঠে নামলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়ে থাকে।
বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশও তাদের ওপর রাবার বুলেট এবং টিয়ার শেল ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে আহন হন ২৪ জন। এছাড়া শহরের আরএ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পুলিশ এবং বিএনপির সংঘর্ষ হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে বিএনপির সমাবেশ এবং আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশকে ঘিরে তৈরি হয় উত্তেজনা। এই সময় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায় নেতাকর্মীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালিয়ে থাকে পুলিশ। এই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে২০ জনসহ আহত হন অন্তত ৭০ জন। পরে হাসপাতালে মারা যান কৃষক দলের এক কর্মী।
ফেনীতে পদযাত্রা শেষ করে যাওয়ার সময় শহরের ইসলামপুর রোডের সামনে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ঘটে থাকে। এই সময় পুলিশ সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন।
কিশোরগঞ্জ শহরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির সময় পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১৩ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জসহ, রাবার বুলেট এবং টিয়ার শেল ছোঁড়ে থাকে পুলিশ।







