ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর এক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। বুধবার রাজ্যটির কিছু এলাকায় সহিংস ঘটনা ঘটার পর আটটি জেলাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই ছাড়াও স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে পাঁচ দিনের জন্য মোবাইল ইন্টারনেট সেবা স্থগিত রাখাও হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীরা বিক্ষুব্ধ এলাকাগুলোতে ফ্ল্যাগ মার্চ করে।
এই রাজ্যের মেইতেই সম্প্রদায়, যারা মণিপুরের জনসংখ্যার কমপক্ষে ৫০ শতাংশ, তারা তফসিলি উপজাতি (এসটি) হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিল।
ভারতে যেসব সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে সমান সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে, তাদের এসটি শ্রেণিভুক্ত করে তাদের জন্য সরকারি চাকরি, কলেজে ভর্তি ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির আসন সংরক্ষণ করা হয়।
গত মাসে মণিপুর হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যের অন্য উপজাতিগুলোর মধ্যে এতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে যে মেইতেইদের এসটি মর্যাদা দেওয়া হলে তাদের চাকরির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। এর প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ডাকা এক মিছিলে হাজার হাজার লোক যোগ দিয়ে থাকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, চুড়াচান্দপুর জেলায় সমাবেশে আসা বিক্ষোভকারীদের সাথে আরেক দল লোকের সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর বিষ্ণুপুর ও আরো কয়েকটি এলাকা থেকেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টা ধরে কিছু সংঘর্ষ-ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। রাজ্য সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
এই রাজ্যের অলিম্পিক পদক বিজয়ী ক্রীড়াবিদ মেরি কোম এএনআই বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সহিংসতায় কিছু লোক তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে হারিয়েছেন।
তবে কর্তৃপক্ষ হতাহতের কোনো খবর নিশ্চিত করেনি। ভারতীয় সেনাবাহিনী বলছে, বুধবার রাতজুড়ে তারা সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি বেসামরিক লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে কার্যক্রম চালিয়েছিলেন।
সূত্র : বিবিসি, আনন্দবাজার পত্রিকা
