
সমস্যার মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া থেকে শুরু করে কম্পিউটার ও ওয়াইফাই খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো, তাও এমন এক দেশে যেখানে ৯৭ শতাংশ মানুষ হচ্ছে দরিদ্র।
গোটা বিশ্বে নারী শিক্ষা বিরোধী সবচেয়ে বড় শক্তি সম্ভবত আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেও দেশটিতে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিশোরী ও নারীদের জন্য বাড়িতে ডিজিটাল উপায়ে শিক্ষার আলো পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। তবে, নানা দিক হতে বাধা আসছে সে উদ্যোগেও।
কাবুলের তরুণী শিক্ষার্থী সোফিয়া শিখতেতে চান ইংরেজি। কোর্সের জন্য অনলাইনে লগ ইন করে অপেক্ষায় বসে থাকেন।
সমস্যা হলো, শিক্ষকরা সোফিয়াকে কোর্সের কোনো অনুচ্ছেদ পড়তে বললে তখন তার কম্পিউটার স্ক্রিন ‘হ্যাং’ হয়ে যায়।
“আপনি কী আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?” --ক্রমাগত জিজ্ঞেস করার পাশাপাশি নিজের ইন্টারনেট সংযোগ বার বার পরীক্ষা করে দেখতে হয় তাকে।
কিছুক্ষণ পরে হয়ত কিছু সময়ের জন্য প্রাণ ফিরে পায় তার কম্পিউটার।
‘বরাবরের মতোই’ ক্লাস আবার শুরুর পরপরই দুর্বল যোগাযোগে একইরকম হতাশ হন আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে থাকেন তার অন্যান্য সহপাঠীরা।
তালেবান প্রশাসনের অধীনে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়া আফগান কিশোরী ও নারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার বিপরীতে অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণের শেষ প্রচেষ্টা চালানোদের একজন হচ্ছেন এই ২২ বছর বয়সী সোফিয়া।
তালেবান কর্মকর্তারা ইসলামিক পোশাক সম্পর্কিত নানা রকম সমস্যার কথা বলে থাকেন। এরা মেয়েদের উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রবেশে বাধা দেয় ও বেশিরভাগ নারীকে বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থায় কাজ করা থেকে সর্বদা বিরত রাখে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন প্রথম তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে, তখন তাদের আনা অন্যতম চমকপ্রদ পরিবর্তন ছিলো ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহার।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ার হামলার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তালেবানদের ক্ষমতাচ্যুত করার ওই সময়টিতে কার্যত কারও কাছেই ইন্টারনেটে প্রবেশের অধিকার ছিল না।
বিশ্বব্যাংকের মতে, প্রায় দুই দশক পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন হস্তক্ষেপ ও বিশ্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পর দেশটির জনগণ মাত্র ১৮ শতাংশ ইন্টারনেটের সংযোগ পাচ্ছেন।
তালেবান প্রশাসন মেয়েদের বাড়িতে স্বতন্ত্রভাবে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছে, আর ইন্টারনেট নিষিদ্ধ করার কোন উদ্যোগ নেয়নি।
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব