ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শাকিবের মেকআপে কত সময় লেগেছিল, খরচ হয়েছে কত

অশীতিপর এক বৃদ্ধ। পরনে সাদা পায়জামা ও পাঞ্জাবি। সেই পায়জামায় ছোপ ছোপ দাগ দেখা যাচ্ছে। মলিন মুখে শঙ্কার ছাপ। প্রথম দেখায় ঠিক চেনা যায় না, আবার চেনা চেনাও লাগে। পরে বোঝা যায়, বড় সাদা পাক ধরা চুলের এই বয়স্ক ব্যক্তি আর কেউ নন, শাকিব খান। প্রায় দুই যুগের লম্বা ক্যারিয়ারে এই অভিনেতাকে আগে কখনো এমন লুকে দেখা যায়নি। প্রথমবার তাঁকে এভাবে দেখে চমকে গেছেন তার ভক্ত ও সহকর্মীরা। ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার এই লুক গত প্রকাশের সাথে সাথেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে  হয়েছে ব্যাপক ভাইরাল হয়ে থাকে।

‘প্রিয়তমা’ সিনেমার পরিচালক হিমেল আশরাফ জানিয়েছেন, ছবিতে শাকিবের বৃদ্ধ অংশটুকু নিয়ে কিছুটা দোটানায় ছিলেন তিনি। কারণ, শাকিব খানকে এমন রূপে আগে কখনো দেখা যায়নি।

ছয় থেকে সাত মিনিটের এই অংশ করতে শাকিব খান রাজি হবেন কি না, সেটা নিয়েও ছিল ভাবনা । কিন্তু চিত্রনাট্য পড়ে বৃদ্ধ অংশটুকু করতে দারুণ আগ্রহী হয়ে ওঠেন শাকিব। নিজে থেকেই বারবার তাগাদা দিতে থাকেন। অচিরেই সিনেমার মধ্যমণি হয়ে ওঠে এই দৃশ্যটি। সামান্য একটা অংশের জন্য বড় বাজেট বরাদ্দ করতে হয়। তারপর প্রস্থেটিক রূপসজ্জায় দক্ষ বড় একটি মেকআপ টিমকে ১৫ দিনের মতো সময় দিতে হয়ে থাকে।

প্রথমে নেওয়া হয় শাকিবের মুখমণ্ডলের মাপ। সেভাবে একটি আবরণ তৈরি করা হয়। সেখানে চুল ও দাড়ি বসিয়ে ঠিক করা হয় লুক। পরে চরিত্রের সাথে মানানসই কি না, যাচাই করার জন্য লুক পরীক্ষা করা হয়। রূপসজ্জাকর সবুজ খান বলেন, ‘পুরো শুটিংয়ে আমরা এই অংশটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। কারণ, প্রস্থেটিক মেকআপ করাটা কঠিন। দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। একটানা বসে থাকতে হয়। ভুল করা যাবে না। সব আলাদা করে লিখে রাখতে হয়। মেকআপের কাজগুলোও ভাগ ভাগ করে দিতে হয়। শুটিংয়ের সময় এই মেকআপ দিতে আমাদের প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘণ্টা লাগত। এই মেকআপ তুলতেও আবার তিন ঘণ্টার মতো সময় লেগেছিল। তিন দিন আগে থেকেই আমরা টানা এই মেকআপের সাথে ছিলাম।’

>>>  শুধু দুই চরিত্র নিয়েই কেন কথা হয়, অভিমানী কারিনা

শাকিব খানকে দুই দিন সকাল সাতটা থেকে এই মেকআপ নিতে হয়। এই ধরনের মেকআপে খরচ কেমন, জানতে চাইলে পরিচালক হিমেল আশরাফ বলেন, ‘এটা অনেক ব্যয়বহুল। যে কারণে ঢালিউড সিনেমায় এই মেকআপের খরচ প্রযোজক বহন করতে চান না। কিন্তু আমরা কোন প্রকার ছাড় দিইনি। এই অর্থ দিয়ে অনায়াসে আমরা মারপিটের কয়েকটি দৃশ্য করতে পারতাম।’ তবে একটি সূত্র বলছে, পাঁচ লাখ টাকার কম নয়।

প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পোস্টারটি ফেসবুকে ১ লাখ ৭০ রিঅ্যাকশন পেয়েছিল। ২৯ হাজার মন্তব্য এবং সাড়ে ৫ হাজার শেয়ার হয়েছিল শুধু শাকিব খানের ফেসবুক পেজ থেকেই। সব মিলিয়ে এই সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি। পোস্টারটি দিয়ে ঝিমিয়ে পড়া ঢালিউড যেন আবার চাঙা হলো। তারকারা পোস্টারটি শেয়ার করতে থাকেন। পোস্টারটি শেয়ার করে পরীমনি লিখেছেন, ‘আরেহ জোশ।’ মাহিয়া মাহি লিখেছেন, ‘ওম্মাহ কী চমৎকার।’ ‘কী সুন্দর লুক, অভিনন্দন শাকিব খান,’ লিখেছেন ববি। এ ছাড়া চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী অঞ্জনা, নিপুণ আক্তার, কাজী মারুফ, মামনুন ইমন, নিরব, সাইমন সাদিকসহ ঢালিউডের অনেক অভিনয়শিল্পীই শাকিব খানকে এই সিনেমার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন।

টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীদেরও আগে চলচ্চিত্রের কোনো তারকার কোনো পোস্ট এত ব্যাপকভাবে ভক্তদের সাথে শেয়ার করে নিতে দেখা যায়নি। শাকিব যেন এখানেও ব্যতিক্রম। অপূর্ব লুকটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘শুভকামনা রইল, শাকিব খান।’ গায়িকা কোনাল তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘শাকিব ভাই কী চমক দেখালেন।’ সহকর্মী এবং ভক্তদের এই প্রতিক্রিয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত পরিচালক হিমেল আশরাফ বলেন, ‘যখন আমরা লুকটি ছাড়ি, তখন আমাদের শুটিং চলছিল। শাকিব ভাই ছিলেন। সবার রেসপন্সে তিনি দারুণ খুশি। মুহূর্তেই ভাইরাল হবে ভাবিনি। এখন সবাই এর প্রশংসা করছেন। তাঁদের প্রত্যাশা যেমন বাড়ছে, তেমনি আমাদেরও দায়িত্ব অনেক বেড়েছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :