মেয়ে আইরাকে নিয়ে চলতি মাসের প্রথম দিকে সুইজারল্যান্ডে যান অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ওই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর রটে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সাথে মিথিলার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছে। সে সময় বিষয়টি নিয়ে মিথিলার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রায় দুই সপ্তাহ পর গত রোববার দেশে ফিরেছেন এই অভিনেত্রী। বিচ্ছেদসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে দৈনিক স্লোগানের সাথে কথা বলেছেন মিথিলা।

গত মঙ্গলবার দুপুরে মিথিলার সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। সৃজিতের সাথে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে বিস্তারিত কথা বলতে চাননি মিথিলা।

তবে ‘বিচ্ছেদ’ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি যে ভুয়া, সেটা স্পষ্ট করেছেন, ‘একটা মিথ্যা জিনিস মানুষ কীভাবে ছড়িয়ে দেয়, অবাক লাগে। অথচ কত ভালো ভালো কাজ করে যাচ্ছি, সেগুলো নিয়ে ওভাবে লেখাও হয় না, ছড়ানোও হয় না। অনলাইনের যুগে এসে যে যেভাবে পারছে, মনগড়া লিখে দিচ্ছে। তবে এসব নিয়ে আমি একদমই মাথা ঘামাই না। দিনশেষে মিথ্যা মিথ্যাতেই থেকে যায়।’

এই নিয়ে মিথিলা আরও বলেন, ‘ওখানে (পশ্চিমবঙ্গ) একটি অনলাইন পোর্টালে মজা করে লেখা একটি গসিপ স্টোরি হয়েছিল। সেখানে কারোর নামও উল্লেখ ছিল না, কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিষয়টিকে অন্যান্য ওয়েব পোর্টাল রং দিয়ে আমাদের নাম জুড়ে দিয়েছে। এরপর যার যার মতো করে ছড়িয়েছে। কলকাতায় এই ধরনের গসিপের চর্চা নিয়মিতই হয়ে থাকে। সেখানে তারকারা এসব গসিপ নিয়ে মাথায় ঘামায় না। কারণ, কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা, তা সবাই জানে, বোঝে।’

আপনাদের সংসার নিয়ে বারবার এই ধরনের গুজব ছড়ায়, বিরক্ত লাগে না—জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এসবে বিরক্ত লাগার কী আছে, এসব মিথ্যা খবরে আমি একদমই পাত্তা দিই না, মাথা ঘামাই না।  আমার সংসার-পরিবার, চাকরি, অভিনয়—এসব নিয়েই আমার দিনরাত্রি।’

সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব জেনেভাতে আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন নিয়ে পিএইচডি করছেন মিথিলা। এই কারণে মাঝেমধ্যেই সেখানে যাওয়া হয় তাঁর। এবার মেয়ে আইরাকে সাথে নিয়েই গিয়েছিলেন। জেনেভায় এটাই আইরার প্রথম ভ্রমণ। মিথিলা শহরের বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন মেয়েকে।

মিথিলা বলেন, ‘আইরাকে আমার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে গিয়েছিলাম। ক্লাসরুম, লাইব্রেরিতেও সে গিয়েছে। পিএইচডির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বক্তব্য ক্লাস ছিল, সেখানও আইরা উপস্থিত ছিল। শহরের সুন্দর সুন্দর জায়গা, শহরেরর বাইরে পাহাড়, পাহাড়ের বরফসহ নানা জায়গায় ঘুরে দারুণ মজা করেছে আইরা। দেশে ফেরার আগে চার দিনের জন্য ইতালির রোমেও মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম।’

এদিকে দেশে ফিরে নতুন খবর দিয়েছেন মিথিলা। কলকাতার আরও একটি ছবিতে যুক্ত হয়েছেন তিনি। ছবির নাম ‘ও অভাগী’। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত গল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’-এর কাহিনি নির্ভর করে ছবিটি তৈরি হতে যাচ্ছে। ছবির পরিচালক লেখক নির্মাতা অনির্বাণ চক্রবর্তী। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন মিথিলা।

ছবিটিতে কাজের ব্যাপারে মিথিলা জানান, গত বছর কাজটির জন্য পরিচালকের সাথে কথা হয়ে থাকে।সেই সময় পরিচালক গল্পটা তাঁকে শোনান। এরপর ছবির চিত্রনাট্য পড়ে চলতি বছর কাজটিতে যুক্ত হয়েছেন তিনি।

ছবিটি নিয়ে মিথিলার ভাষ্য, ‘এখানে আমার চরিত্রটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দুটি সময়ের দুটি চরিত্র করতে হবে। একটি ১৫ থেকে ১৬ বছরের চঞ্চল তরুণীর, আরেকটি বিবাহিত ত্রিশোর্ধ্ব নারীর। অভাগীর ১০ বছরের ছেলে আছে। সব মিলে চরিত্র বেশ মজার আছে। সেই সাথে অভিনয় দেখানোর জায়গা আছে। আমি সব সময়ই সিনেমাতে এই ধরনের চ্যালেঞ্জিং চরিত্র করতেই পছন্দ করে থাকি। এর আগে কলকাতার “মায়া” ছবিতে তিন সময়ের তিনটি লুকে কাজ করেছি।’