
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৬৫ তম একাডেমিক কাউন্সিলে (বিশেষ) গুচ্ছ পদ্ধতির পক্ষে কথা বলায় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদকে অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সভায় ওই শিক্ষককে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাত ১১ টা ১৭ মিনিটের সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে এ দাবি করা হয়। ৬ এপ্রিল ওই শিক্ষককে হেনস্তার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত গত ৬ এপ্রিলের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় একজন শিক্ষককে নাজেহাল করার বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত খবরটি শিক্ষক সমিতির গোচরীভূত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে একাডেমিক কাউন্সিলের উক্ত সভায় আমাদের একজন সম্মানিত সহকর্মী ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বক্তব্যের একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে এজেন্ডা বহির্ভূত বক্তব্য দিতে থাকেন এবং টেবিল চাপড়িয়ে উত্তেজনাকর ও অনাকাঙ্খিত পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এ অবস্থায় সভায় উপস্থিত সহকর্মীরা তাকে শান্ত হওয়ার জন্য বলেন এবং একপর্যায়ে কয়েকজন সহকর্মী তার হাত ধরে আসনে বসতে অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে উক্ত সহকর্মী তার নিজের ভুল বুঝতে পেরে সভায় উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এরপর উপাচার্য মহোদয় যথাযথভাবে সভা পরিচালনা করেন।’
এ ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদকে উদ্দেশ্যপ্রোণোদিত আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন পত্রিকায় অতিরঞ্জিত ও ভুলভাবে উপস্থাপন ও সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা খুবই দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই পরিষদের উক্ত সভায় কোনো ধরনের লাঞ্ছনার বা হেনস্তার ঘটনা ঘটেনি। চলমান নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তির আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপকৌশল হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা বিষয়টাকে উদ্বিগ্নতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। যে বিষয়টি উক্ত সভাতেই নিষ্পত্তি ঘটেছে, সেটিকে নিয়ে জল ঘোলা করায় জবি শিক্ষক সমিতি মর্মাহত এবং এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও একাডেমিক স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনে ৭০০ সদস্যের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিবার ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তায় ঐক্যবদ্ধ বলে প্রতিবাদলিপিতে জানানো হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম লুৎফর রহমান বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিলের দিন ভূগোলের চেয়ারম্যান আমি কথা বলার সময় আমাকে কথাই বলতে দিচ্ছিল না। ওনি বারবার উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিল। সবাই ওনাকে শান্ত হওয়ার জন্য বলছিল। ওনি একপর্যায়ে টেবিল চাপড়িয়ে কথা বলছিল। কিন্তু ওখানে মারামারি কিংবা হাতাহাতির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আর সামগ্রিক বিষয়টি ওখানেই মিটমাট হয়ে গিয়েছিল।’
জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘সেদিন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ আমিও ছিলাম। যেভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। সেরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। সেজন্য প্রতিবাদলিপি দেওয়া হয়েছে। সেদিন তিনি অনেকটা উত্তেজিত হয়ে টেবিল চাপড়িয়ে কথা বলায় বাকিরা তাকে শান্ত করে বসিয়ে দিয়েছেন। মারধরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব