রাজশাহীর বাজারে নামল গোপালভোগ আম। জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন এবং বাজারজাত মনিটরিং-সংক্রান্ত সভায় ঘোষিত ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ীই এবার এই আম বাজারে এল। রাজশাহীতে আমের বড় বাজার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে আজ সোমবারে গোপালভোগ আম দেখা গেছে। বিক্রেতারা পাকা আম প্রমাণ করার জন্য আম কেটেও দেখাচ্ছেন।
বাজারে গোপালভোগ নামার খবর পেয়ে গেছেন অনলাইনে আমের সরবরাহকারীরাও। তাঁরা আমের গাড়ির সাথে ভিডিও কল করে ক্রেতাদের ছবি দেখাচ্ছেন। এতে আম পাকা নিয়ে তাঁরা ক্রেতাদের বিভ্রান্তি দূর করছেন।
রাজশাহী জেলায় প্রকাশিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গুটি আমের পর গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষ্মণভোগ বা লখনা এবং রানীপসন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে। বাকি অন্যান্য জাতের আম এর পরপরই বাজারে আসবে। সেই হিসাব অনুযায়ী সোমবার দুপুরে বানেশ্বর বাজারে গিয়ে গুটি আমের সাথে গোপালভোগ আম দেখা গেছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন জানান, রাজশাহীতে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে গোপালভোগ আম চাষ হয়ে থাকে। এবার ১৫ মে থেকে এই আম পাড়ার তারিখে ঘোষণা করা হয়েছিল। তার দুই-তিন দিন আগে থেকেই আম গাছে পাকা শুরু হয়েছে।
বানেশ্বরের ব্যবসায়ী ফারুক জোয়ারদার একটি ভটভটি নিয়ে গোপালভোগ আম নিয়ে বেলা দেড়টার দিকে বাজারে ঢুকলেন। কাঠফাটা রোদের মধ্যে তিনি ভটভটির ওপর বসে থাকলেন। গাড়ির ওপর থেকেই তিনি ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এই সময় অনলাইন আম সরবরাহকারীদের দেখা গেল। ফারুক ভিডিও কলে গোপালভোগ ক্রেতাদের দেখাচ্ছেন। তিনি বললেন, প্রথম দিনে তিনি ১২ মণ পেড়েছেন। দাম হাঁকছেন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা মণ।
দুর্গাপুরের আম ব্যবসায়ী ওয়াজনবী একইভাবে ভটভটিতে করেই ১৫ মণ গোপালভোগ আম এনেছেন। তিনি বলেছেন, তিন-চার দিন আগে থেকে তাঁর গাছেই আম পাকা শুরু হয়েছে। পাশ থেকে তাঁর একজন সহকারী বলেছেন, এই আমের মধ্যে অন্তত ১০০টি পাকা আম পাওয়া যাবে। তাঁর আম আকারে অনেকটা ছোট। তিনি বলছেন, বড় গাছের আম আকারে একটু ছোট হয়। খেতেও সুমিষ্ট হয়। বাইরের ব্যবসায়ীরা তাঁর আমের দাম ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ বলেছেন বলে তিনি জানালেন।
বানেশ্বর আমবাজারে রাস্তার ধারেই অনেক ব্যবসায়ী আম নিয়ে বসে যান। তাঁরা খুচরা আম বিক্রি করেন। ইতিমধ্যে টানা রোদে তাঁরাও আম নিয়ে বসে গেছেন। পুঠিয়ার চিতলপুকুর এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম সাড়ে তিন মণ আম নিয়ে এসে খুচরায় বিক্রি করতে বসে গেছেন। তাঁর আমও আকারে অনেকটা ছোট। তবে আমে রং ধরেছে। তিনি আম কেটে ডালির ওপর রেখে দিয়েছেন। একই গ্রামের ব্যবসায়ী রনি এনেছেন প্রায় তিন মণ গোপালভোগ আম। তাঁর আমও আকারে অনেকটাই ছোট।
তিনিও বললেন, বড় গাছের আম। এখনো বাজারে বেশি ক্রেতার সমাগম ঘটেনি। তবে ভটভটিতে করে ব্যবসায়ীদের আম নিয়ে ছোটাছুটি এতেমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
বানেশ্বর আমবাজারের ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। তবে প্রথম দিনে বেশি আম বাজারে আসেনি।






