বাংলাদেশের জন্য ৪০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ কার্যক্রম সংস্কার, সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তারা যেন স্বল্প সুদে উদ্ভাবনী অর্থায়ন পান, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের জন্য এই ঋণ অনুমোদন করেছে এডিবি।

কোভিড–১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে ২০২১ সালে এডিবি যে সাসটেইনেবল ইকোনমিক রিকভারি প্রোগ্রাম বা টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি হাতে নেয়, তার দ্বিতীয় উপকর্মসূচি হিসেবেই এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে বলে এডিবির একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এডিবির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গণব্যবস্থাপনা–বিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ আমিনুর রহমান বলেন, এই উপকর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন ও সরকারি ব্যয় এবং ক্রয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করা। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করাও এর অন্যতম লক্ষ্য।

আমিনুর রহমান আরও বলেন, এই উপকর্মসূচির আওতার অন্য বিষয়গুলো হলো লৈঙ্গিক সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটাইজেশন ও দরিদ্র এবং অরক্ষিত মানুষের উপার্জনমূলক কর্মসূচি প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন আয়কর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে আয়কর সংগ্রহ বৃদ্ধি, করব্যবস্থার ভুলত্রুটি দূর করা, আইন মান্য করানোর ব্যবস্থা শক্তিশালী করা ও দেশের করজাল সম্প্রসারণে সহায়তা করবে এই কর্মসূচি। এছাড়া ইলেকট্রনিক ক্রয় এবং পেমেন্ট–ব্যবস্থা শক্তিশালী করার মাধ্যমে সরকারি ক্রয়ের স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা বাড়ানোও এই কর্মসূচির লক্ষ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল মাধ্যমে স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, প্রান্তিক এবং ভূমিহীন কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষের ঋণ পাওয়া সহজ হবে। ক্ষুদ্র এবং ছোট ব্যবসায়ী বা নারী উদ্যোক্তা, যাঁরা জমি বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারবেন না, তাঁরা লেনদেন এবং অন্যান্য অস্থায়ী জামানতের মাধ্যমে ঋণ পাবেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এডিবির নতুন এই কর্মসূচি এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করবে।

বহুজাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবথেকে বেশি ঋণ নিয়েছে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে। সংস্থাটির কাছ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৮১৬ কোটি ডলার।

বিশ্বব্যাংকের পরের স্থানেই রয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৩২৮ কোটি ডলার।

এডিবি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় সব প্রধান খাতেই সহায়তা দেয়। কৃষি, প্রাকৃতিক সম্পদ, অবকাঠামো, জ্বালানি, পরিবহন, শিক্ষা, পানি সরবরাহসহ বিভিন্ন খাতে তারা এর আগে বাংলাদেশকে ঋণ দিয়ে সহায়তা করেছে।