
শোকে বিহ্বল আত্মীয়-স্বজন, লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। একদিকে বাড়ির বাইরে মাইকে জানাজা এবং দাফনের সময়ের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখা গেছে শান্তা ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থীর। আজ মঙ্গলবার তার ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা ছিল।
পরীক্ষা শেষে শান্তা বাড়ি ফিরলে বিকেলে বাবার জানাজা এবং দাফন কাজ শেষ করা হয়েছে। শান্তা ইসলাম আলফাডাঙ্গার কামারগ্রাম আদর্শ ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার ২২ আগস্ট) সকাল ১০টার আগে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এক আত্মীয়ের সাথে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছায় সে।
পরিবারারিক সূত্রে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল এলাকার বাসিন্দা মো. মাহামুদ শেখ (৬২) আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নিজবাড়িতে মারা যান।
তার মৃত্যুতে বাড়ির লোকজন এবং প্রতিবেশীদের কান্নায় এলাকা ভারী হয়ে ওঠে। বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়লেও এইসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় মেয়ে শান্তা। বাবাকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাকে।
আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এমএম মজিবুর রহমান জানান, 'কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে মেয়েটির খোঁজখবর নিয়েছি।
বাবাকে হারানো যেকোনো সন্তানের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও শান্তা নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।' আজকে (২২ আগস্ট) ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার পরীক্ষায় দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রজত বিশ্বাস বলেন, 'তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসার পর জানতে পেরেছি। সহপাঠীদের সাথে বসে পরীক্ষা দিয়েছে।
আমরা চেয়েছিলাম, সে সবার সাথে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিক। তবে তাকে শোকাহত হতে দেখেছি। সবার সাথে পরীক্ষা দিলে তার জন্য ভালো হবে ভেবে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রকাশক: মনসুর মো. এন হাসান
সম্পাদক: মো. আশরাফুল ইসলাম
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী-সম্পাদক: আনোয়ার সজীব