ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তামাকের কারণে বছরে ক্ষতি ৮ হাজার কোটি টাকা

তামাক থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব আয় করে, তার চেয়ে বেশি ব্যয় হয় তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসায়। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার এ তথ্য জানান। ‘ক্যান্সার সার্ভে-২০১৮’ এর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এ খাতে রাজস্ব আয় প্রায় ২২ হাজার ৮১০ কোটি এবং চিকিৎসা ব্যয় প্রায় ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। তামাকের কারণে বার্ষিক ক্ষতি প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।

শনিবার ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘নারী মৈত্রী’র আয়োজনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন হোসেন আলী খোন্দকার। তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার পাশাপাশি তামাকের বিরুদ্ধে সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) পরিচালক (অধ্যায়ন ও প্রশিক্ষণ) শাহ শেখ মজলিশ ফুয়াদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাছরিন আকতার।

‘রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়’ বলে মনে করেন শ্যামল দত্ত। তিনি বলেন, সংসদে তামাকবিরোধী লোকের চাইতে তো তামাকের পক্ষের লোকই বেশি। প্রকাশ্যে ধূমপান করা যাবে না, এই আইন তো আগেও ছিল। তার প্রয়োগ কি হয়েছে? আইন হলেই সমাধান হবে বলে আমার মনে হয় না। অনেক আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই।

শ্যামল দত্ত বলেন, জাতীয় সংসদে সংবাদ কাভার করতে গিয়ে দেখেছি, বিড়ির পক্ষে আমাদের সংসদ সদস্যদের অনেকে প্রকাশ্যে অবস্থান নেন। বিড়ির উপর ট্যাক্স বাড়ালে নাকি বিড়ি শিল্প ধংস হয়ে যাবে। এজন্য তামাকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার দরকার। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে এসব বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।

>>>  'মুদ্রাস্ফীতি' কি একটি দেশের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?

আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, টোব্যাকো এটলাস ২০১৮- এর তথ্য মতে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মানে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ও জীবন রক্ষায় দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে এখনই।

শাহীন আকতার ডলি বলেন, তরুণরা ই-সিগারেটের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদের এই আসক্তি থেকে বের করে আনতে ই-সিগারেট বাজারজাত বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। শুধু তাই নয় বন্ধ কর‍তে হবে সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি। পাশাপাশি তামাকজাত পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আকার ৫০% থেকে ৯০% এ বৃদ্ধি করা এবং বিক্রির স্থানে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, রিয়াজ আহমদ, জুলহাস আলম, লোটন একরাম, শাহনাজ বেগম পলি, মো. আব্দুস সালাম মিয়া, হুমায়রা সুলতানা, আতাউর রহমান প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :