ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দামের সাথে বাড়ছে সিগেরেট বিক্রি,মুনাফায় রেকর্ড

মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ যখন দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন তামাকজাত পণ্যর বিক্রিও বেড়েছে বহুগুণ। হলে সিগারেট বিক্রি করে রেকর্ড আয় এবং মুনাফা করেছে তামাক পণ্য বাজারজাতকারী বহুজাতিক ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)।

সোমবার (২৪ জুলাই) চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে বিএটিবি। তাতে দেখা যায়, বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কোম্পানিটি ২১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার রেকর্ড সিগারেট এবং তামাকজাত পণ্য বিক্রি করেছে। আর এই বিক্রির বিপরীতে সব খরচ এবং কর বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৯৫০ কোটি টাকা। মুনাফার ক্ষেত্রেও কোম্পানিটি রেকর্ড তৈরি করেছে।

গত ১৩ বছরে অর্থাৎ ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছর কোম্পানিটি যে ব্যবসা এবং মুনাফা করেছে, তা ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

২০১০ সালের অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা ছিল মাত্র ৩ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকার। আর সে বছর কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ১৫৪ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই কোম্পানিটির ব্যবসা করেছে ২১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার। আর নিট মুনাফা অর্জন করেছে ৯৫০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ১৩ বছরে বহুজাতিক এই কোম্পানিটির আয় এবং মুনাফা ছয় গুণের বেশি বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে জুন-এ ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৫৯ পয়সায়, গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৬ টাকা ৯৩ পয়সা।

বিএটিবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি ৩ হাজার ৯১১ কোটি পিস সিগারেট বিক্রি করেছে। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি বিক্রি করেছিল ৩ হাজার ৫৩৯ কোটি পিস সিগারেট। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ৩৭২ কোটি পিস সিগারেট এর বিক্রি বেড়েছে।

>>>  এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে হয়েছে ৯ দশমিক ২৪%

সিগারেট কোম্পানির ক্ষেত্রে সরকার কর এবং ভ্যাট সাধারণ যেকোনো কোম্পানির তুলনায় বেশি। সিগারেট এবং তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন সময় সিগারেট এবং তামাকজাত পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকারী কোম্পানির ওপর কর এবং ভ্যাট বাড়িয়ে থাকে। এই কারণে কয়েক বছর ধরে বাজেটকে কেন্দ্র করে সিগারেটের দাম বৃদ্ধি পায়। তবে বিএটিবির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, শুল্ক, কর এবং ভ্যাট বাড়িয়েও সিগারেটের ব্যবহার কমানো যাচ্ছে না। বরং দাম যত বাড়ছে সিগারেটের বিক্রিও তত বাড়ছে। এতে বেড়েই চলছে সিগারেট কোম্পানির আয় এবং মুনাফা।

দেশে বর্তমানে কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ করহার তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির। এ করহার ৪৫ শতাংশ। তার সঙ্গে আছে আড়াই শতাংশ সারচার্জ। এর বাইরে অন্যান্য শুল্ক ও ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন করও রয়েছে। কিন্তু বছর বছর কর বাড়িয়েও সিগারেটের বিক্রি কমানো যাচ্ছে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :