চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার। যার মধ্যে পণ্য খাতে ৬২ বিলিয়ন ও সেবা খাতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার ( ১২ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পণ্য এবং সেবা মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে প্রায় ৫৫.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে ১১.৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।’
সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব ও আমাদের এই বক্তব্যের সাথে ব্যবসায়ীরা একমত পোষণ করেছেন। রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা গ্যাস-বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
আমরা তাদের কথা শুনেছি ও তাদের দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।’
বিগত দুই অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ও লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জনের হারসহ পণ্য এবং সেবা খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অর্থবছরে রপ্তানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিধারা, পণ্য এবং বাজার সম্প্রসারণ এবং বহুমুখীকরণে সরকার গৃহীত আর্থিক এবং অ-আর্থিক প্রণোদনা, বিশ্ববাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, দেশীয় এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ও রপ্তানি সম্ভাবনাময় নতুন পণ্য এবং সেবা খাতের বিকাশ বিবেচনায় নিয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন তার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংবিধান অনুযায়ী হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো কিছুই বন্ধ থাকবে না।
অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলবে। অতএব, নির্বাচনের বছর উপলক্ষে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘২০২৩ সালের শেষ পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ঘটবে বলে বিভিন্ন সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে। এই পূর্বাভাস ঠিক থাকলে এই সময়ে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থা এখন পর্যন্ত যেসব পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে তা বিবেচনায় নিলে চলতি বছরের মন্দা অবস্থা বছরের শেষ দিকে কাটতে শুরু করবে ও আগামী বছরে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরায় প্রবৃদ্ধির ধারায় ফেরত আসবে।
বিগত অর্থবছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য খাতে ৫৮.০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫৫.৫৬ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৫.৮ শতাংশ ও পূর্ববর্তী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৬.৬ শতাংশ বেশি। পণ্য এবং সেবা খাত মিলে ৬৭.০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬৪.৫৫ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৬.৩ শতাংশ ও পূর্ববর্তী ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৫.৮ শতাংশ বেশি।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সঞ্চালনায় সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থার প্রতিনিধি ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।






