শুরু হয়ে গেছে ঈদুল আজহার আমেজ। ঈদের কোরবানির হাটে পশুর চাহিদা মেটাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে এখনো ঢাকায় প্রবেশ করছে গরু। আর অতিরিক্ত বাসভাড়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য সেই ট্রাকে করেই শেকড়ের টানে গ্রামে ফিরছেন মানুষ।
আজ মঙলবার (২৭ জুন) সাভারের চন্দ্রা-নবীনগর, ঢাকা-আরিচা এবং বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, বাজারে গরু নামিয়ে ফেরার সময় সেই একই ট্রাকে উঠে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। অন্য দিকে একের পর এক গরু ভর্তি ট্রাক প্রবেশ করছে ঢাকার ভিতরে। বেশ ঝুঁকি নিয়েই ঈদ উদযাপনের জন্য গ্রামে ফিরছে মানুষ।
ট্রাকে করে রাজশাহী যাবেন পোশাক শ্রমিক আলমগীর হোসেন। তিনি দৈনিক স্লোগানকে বলেন, আমরা আগে সকালেই বের হয়েছি গ্রামে ফেরার জন্য। বাসের তো টিকিটই পাওয়া যায় না। টিকিট ছাড়া যেসব বাস ছাড়ে সেসব বাসের ভাড়া ডাবল। এজন্য গ্রামে যেতে ট্রাকে করে ঝুঁকি হলেও বাধ্য হয়ে যাচ্ছি। আমি এই নিয়ে দুই বার ট্রাকে যাত্রা করছি। এর আগে ট্রাকে কম ভাড়ায় বাড়ি পৌঁছাতে পেরেছি। ঝুঁকি থাকলেও কিছুই করার নেই। কারণ আমাদের আয় তো সীমিত।
অপর যাত্রী আসমা বলেন, আমরা ঈদে ট্রাকেই বেশি যাতায়াত করি। আমি মেয়ে মানুষ, তাই ট্রাকে উঠতে আর নামে একটু সমস্যা হয়ে থাকে।
এছাড়া আর তেমন কোন সমস্যা হয় না। একটু কষ্ট হয়, তবুও তো কম ভাড়ায় তো বাড়ি যেতে পারি। আমাদে পরিবারের সদস্য ৫ জন। বাসে যেতে গেলে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লেগে যাবে। কিন্তু ট্রাকে গেলে খরচ পরে অর্ধেক। ঝুঁকি আছে জানি, কিন্তু রোদ আর বৃষ্টি ছাড়া আর তেমন কোন সমস্যা দেখি না।
ট্রাক ভর্তি গরু নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করছেন ট্রাকচালক লিটন। তিনি বলেন, ঈদে আমরা শুধু গরু নিয়েই ঢাকায় প্রবেশ করি। ফিরে যেতে হয় খালি গাড়িতেই। তেলের দাম বেশি হওয়ায় আমাদের তেমন লাভ হয় না। ঈদ তো আমাদেরও আছে। এজন্য আমরা ফেরার সময় যা পাই তাই নিয়ে ফিরে যাই। এতে আমাদের বাড়তি কিছু টাকা আসে। যা নিয়ে আমরা ছেলেমেয়েদের জন্য নতুন জামা কিনতে পারি।
ট্রাকে ভর্তি মানুষ নিয়ে উত্তর বঙ্গে যাচ্ছেন চালক মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ট্রাকে মানুষ তো জোর করেই ওঠে থাকে। আমরা তো আর ডেকে তুলি না। তাদের ট্রাকে না তুললে উল্টো বকাবকি করেন। আমাদের এখানে কি দোষ। লোক গাড়িতে উঠলে অনেক সময় আমাদের জরিমানা দিতে হয়। আমরা নিজেরাই কষ্টে আছি। গাড়িতে লোক উঠালেও দোষ না উঠালেও দোষ। আমাদের ভাড়া তারা বেশি দেয় এমনটাও না। স্বল্প ভাড়াতেই আমরা তাদের পৌঁছে দেই।
ঢাকা জেলা উত্তরের ট্রাফিক বিভাগের অ্যাডমিন চৌধুরী শহীদ বলেন, পণ্যবাহী যানবাহনে মানুষ পরিবহন করা অবৈধ। আমরা এসব যানবাহন পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকব। গত ঈদেও আমরা এমন পরিবহনকে ড্যাম্পিং করেছি বেশ কিছু মামলাও করা হয়েছিল। এবারও আমরা এর ব্যবস্থা নেব।







