ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে যারা অনলাইনে পশু বেচাকেনায় প্রতারণা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ইতিমধ্যে রবিবার দিবাগত রাতে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করতে রাজধানীতে প্রবেশ করা ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে ঈদুল আযহা উপলক্ষে গাবতলী কুরবানির পশুর হাটে র্যাব কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকবৃন্দের সাথে এসব কথাই বলছেন তিনি।
এই অনলাইনকে পশু কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হোন সেজন্য র্যাবের সাইবার টিম কাজ করে করছে। বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। যারা অনলাইনে পশু বেচাকেনায় প্রতারণা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়ে থাকবে।
মঈন বলেন, কোরবানির হাটগুলোত হাসিল ঘর রয়েছে। অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন, অতিরিক্ত হাসিল আদায়েরই অভিযোগ এসেছে। হাটগুলোতে আমাদের মোবাইল টিম কাজ করছে। অতিরিক্ত হাসিল গ্রহণ করলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারো আমরা কোরবানির হাটকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। স্বনামধন্য যে হাটগুলো রয়েছে সেখানে হাট পরিচালনা কমিটির সাথে সমন্বয় করে আমরা কন্ট্রোল রুম এবং ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছি। কোরবানির হাট এবং কোরবানির পশু বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে আমরা বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, কোরবানির হাটে প্রচুর কুরবানীর পশু বেচাকেনা হয়, এই কোরবানির পশু বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিক দ্রব্য খাইয়ে গরুকে মোটাতাজাকরণ করে অথবা অস্বাস্থ্যকর গবাদি পশু বিক্রি করে থাকে। এসবের বিরুদ্ধে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায়, ভেটেনারি ডাক্তারের সমন্বয়ে র্যাব একটি টিম গঠন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে।
বিভিন্ন হাটে এই টিম পর্যবেক্ষণে যাচ্ছে৷ সকাল থেকে গাবতলী হাটেও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ জন ব্যবসায়ীকে সতর্ক করেছি। যারা গবাদি পশু এখানে বেচাকেনা করছেন। যাদের আনা গবাদি পশু মানসম্মত নয়। কোরবানির হাট কেন্দ্রিক দালাল অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি প্রতারক চক্র এবং জাল টাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গতকাল রাত থেকে হাটকেন্দ্রিক অভিযানে প্রতারণা, ছিনতাইয়ে জড়িত ২০ জনকে আমরা করেছি গ্রেপ্তার করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, কোরবানির হাটকেন্দ্রিক প্রচুর টাকার নগদ লেনদেন হয়ে থাকে। যেখানে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী জাল টাকা নিয়ে হাটে আসেন, লেনদেন করার চেষ্টা করেন। এই হাটে আমরা জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন আমরা র্যাব কন্ট্রোল রুমে রেখেছি। আমরা কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে ৫০ এর অধিক কারবারিকে আটক করেছে যারা জাল টাকা কারবারে জড়িত। প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে।
সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে মঈন বলেন, আপনারা যারা কোরবানির পশু হাটে ক্রয়-বিক্রয় করবেন তারা নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে সহযোগিতা নেন, প্রয়োজনে লেনদেনের টাকা জাল কিনা তা মেশিনে জাল টাকা শনাক্ত করুন। এতে করে আমরা জাল টাকা কারবারিদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারবো।
তিনি বলেন, নারী ক্রেতা এবং সাধারণ ক্রেতারা অনেক সময় ভোগান্তি হয়রানি শিকার হন, ইভটিজিংয়ের শিকার হন। কেউ প্রতারিত বা ভোগান্তির শিকার হলে র্যাব কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ করুন আমরা তাৎক্ষনিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বিভিন্ন সময় কোরবানি পরবর্তী কোরবানির চামড়ার সঠিক মূল্য পান না প্রান্তিক কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা। একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেন। আমি তাদের হুশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম কাজ করছে। আমরা বেশ কিছু তথ্য ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছি। চামড়া বেচাকেনাং সিন্ডিকেট করলে আমরা আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ইতিমধ্যে মহাখালী এবং সাভারে আমাদের গোয়েন্দা টিম অভিযান পরিচালনা করেছেন দালালচক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, আমাদের সাইবার মনিটরিং টিম সর্বদা কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু অনলাইন পশু কেনাবেচার পেইজ সনাক্ত করেছি। যারা কোরবানির পশু বেচাকেনা করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরবরাহ করেননি। ঈদের এখনো দুই দিন বাকি আছে। আমরা মনিটরিং করছি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকবো।
তিনি বলেন, আমরা গরুর হাট থেকে গরু চুরির অভিযোগ পেয়েছি। যারা এসবের সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। গতকাল আমরা এই গাবতলী ও সাভার রোডে অভিযান পরিচালনা করে ২১ জন সদস্যকে আটক করেছি। যাদের বিরুদ্ধে গরু ছিনতাই বা গরু নিয়েও টাকা না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।






