বাখমুত শহরকে ঘিরে অগ্রসর হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার এই দাবিই করেছেন। তিনি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরকে রুশ বাহিনীর সাথে ‘লড়াইয়ের কেন্দ্রস্থল’ হিসেবেই বর্ণনা করেছেন।
চলমান যুদ্ধের সবচেয়ে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর গত মাসের শেষ দিকে ইউক্রেনের কাছ থেকে বাখমুত দখল করে নেয় রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ভাগনার। পরে তারা রাশিয়ার নিয়মিত বাহিনীর কাছে শহরটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে থাকে। এখন আবার বাখমুত পুনরুদ্ধারে অগ্রসর হচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী গোষ্ঠী।
রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধারে ইউক্রেন অনেক দিন ধরেই পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনার কথা বলে আসছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেই পাল্টা হামলা শুরু হয়েছে কি না, তা এখনো বলেননি ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী।
এদিকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা গতকাল সোমবার পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের একটি নতুন হামলা প্রতিহত করেছে। আগের দিন রোববার দোনেৎস্কের পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে কিয়েভ বড় ধরনের হামলা চালিয়েছিল। সে হামলাও ব্যর্থ করে দেওয়ার দাবি করে থাকে রাশিয়া।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে থাকে রাশিয়া। এই হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে সংগঠিত সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী লড়াই হয় বাখমুতেই।
শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরেই তুমুল লড়াই করতে দেখা যায়। বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধে বাখমুতের কৌশলগত গুরুত্ব খুব কম। তবে কিয়েভ এবং মস্কো উভয়ের জন্য বাখমুত জয়ের প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে।
ইউক্রেন এবং রাশিয়া গতকাল যেসব দাবি করেছে, তার স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
আজ মঙ্গলবার ভোরে ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন-ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
কিয়েভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের রাজধানীতে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এখন সচল রয়েছে।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেন, শত্রুদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর দেশের সামরিক ইউনিটগুলো বাখমুতের বিভিন্ন দিক দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।
চারটি গ্রামের কথা উল্লেখ করে ইউক্রেনের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, তাঁর দেশের বাহিনী গ্রামগুলোর দিকেই অগ্রসর হয়েছে। এই গ্রামগুলো বাখমুতের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।
রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ভাগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিনও স্বীকার করেছেন যে, বাখমুতের উত্তর দিকে বেরখিভকা গ্রামের কিছু অংশ পুনরুদ্ধার করে ফেলেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
গতকাল রাতে এক ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, বাখমুত থেকে তাঁরা যেই খবর পাওয়ার আশা করছিলেন, সেটি দেওয়ার জন্য তিনি তাঁর দেশের সেনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। শত্রুরা জানে, এই যুদ্ধে ইউক্রেনেরই বিজয় হবে।






