মরুভূমির ফল ‘সাম্মাম’। দেখতে অনেকটা তরমুজেরই মতো। দেশের মাটিতে এই ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক মোন্নাফ আলী মণ্ডল।
উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোন্নাফ আলী মণ্ডল এই ফলের চাষ করেছেন। ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন অনেকেই।
নতুন জাতের এই ফল উৎপাদনের খবর পেয়ে ওই কৃষকের ক্ষেতে প্রতিদিন ভিড় করছেন আশপাশের কৃষক এবং দর্শণার্থীরা। অনেকেই এই ফল খেয়ে দেখছেন, কেউবা পরিবারের জন্য কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তরমুজ চাষের মতো করেই সারিবদ্ধভাবে তৈরি করা হয়েছে মাটির ঢিবি। দূর থেকে যে কেউ দেখলে মনে করবেন এটি একটি তরমুজের ক্ষেত। কিন্তু কাছে যেতেই বোঝা গেল এটি তরমুজ নয় অন্যকিছু–সাম্মাম।
মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে সেখানে ‘সাম্মামের’ চারা রোপণ করা হয়েছে। আর ছিদ্র করা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠেছে ‘সাম্মামের’ গাছ।
মালচিং চীন এবং জাপানে ব্যবহৃত বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত এবং বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেওয়া হয় তখন তাকে বলে মালচ। আর এই পদ্ধতিকে বলা হয় মালচিং।
চাষ আধুনিকীকরণ হওয়ার সাথে সাথেই প্লাস্টিক মালচিং-এর ব্যবহারও জনপ্রিয় হচ্ছে।
মোন্নাফ আলী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই তরমুজ চাষ করে আসছেন। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে মরুভূমির ফল ‘সাম্মাম’ চাষ দেখে উৎসাহী হয়েছেন তিনি।
“চুয়াডাঙ্গার এক পরিচিত কৃষকের কাছ থেকে ‘সাম্মাম’ ফলের বীজ সংগ্রহ করি। সেসব বীজ থেকে বাড়িতে চারা তৈরি করি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রাথমিকভাবে চারাগুলো রোপন করি ৭৫ শতক জমিতে।
“তরমুজের মতো করেই মাটিতে এই ফলের চাষ করা যায়। জমিতে রোপণের দেড় মাসের মধ্যে গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যে পরিপক্ব হয়ে যায় ‘সাম্মাম’।”
তিনি আরও বলেন, বীজ, চারা তৈরি, জমি চাষ, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ আনুষঙ্গিক প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা খচর হয়েছে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ফলটি বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এসব ফল বিক্রি করা হচ্ছে।






