ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অবুঝ দুই সন্তান লইয়া ক্যামনে বাঁচব, কী খাওয়াব!

দৈনিক স্লোগান, দুর্ঘটনা


অকালে স্বামীকে হারিয়ে ছোট্ট দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আসমা আক্তার ছবি: প্রথম আলো

গ্রামে অটোরিকশা চালাতেন রুহুল আমিন (৩২)। সাত মাস আগে ধারদেনা করে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। বিদেশের মাটিতে যা আয় হতো তা দিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। এ বছর ওমরাহ করতে চেয়েছিলেন রুহুল। সেই উদ্দেশ্যই গত সোমবার বাসে চড়ে মক্কায় যাচ্ছিলেন তিনি। তবে পথে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হলে রুহুলের মৃত্যু হয়েছে। এমন অকালমৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না রুহুলের পরিবার।

রুহুল আমিনের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের দিয়াপাড়া এলাকায়। তাঁর বাবা মৃত মো. ইসহাক মাতুব্বর।পরিবারের চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে রুহুল সবার ছোট। রুহুলের ৭ বছর বয়সী এক ছেলে ও ৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

গত সোমবার ইয়েমেন সীমান্তবর্তী সৌদি আরবের আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় একটি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। রুহুলসহ বাসের যাত্রীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কার দিকে যাচ্ছিলেন। ব্রেক কাজ না করায় একটি সেতুর ওপর উল্টে গিয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায় বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে। এতে রুহুলসহ ওই বাসের ১৮ বাংলাদেশি যাত্রী নিহত হয়ে থাকে।

দিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, উন্নত জীবনের আশায় সাত মাস আগে চার লাখ টাকা ধারদেনা করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন রুহুল। সেখানে একটি হোটেলেও কাজ করতেন তিনি। আগামী বছর ঈদে দেশে আসার কথা ছিল রুহুলের। তাই এ বছর ওমরাহ করতে চেয়েছিলেন। মক্কা যাওয়ার জন্য গত সোমবার বাসে ওঠেন রুহুল। এর পর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল বুধবার রাতে রুহুলের পোশাক ও পরিচয়পত্র দেখে তাঁর মামাতো ভাই জসিম বাড়িতে ফোন করে জানান, রুহুল মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় রুহুলের শরীরের অর্ধেকের বেশি অংশ পুড়ে গেছে।

মাদারীপুর শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রুহুলের বাড়ি। আজ বেলা ১১টার দিকে রুহুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির চারপাশে মানুষের ভিড়। বাড়িতে ঢোকার অনেক আগে থেকে ভেসে আসছিল কান্নার আওয়াজ। ভিড় ঠেলে বাড়ির উঠানে গিয়ে দেখা যায়, রুহুলের স্ত্রী আসমা আক্তার মাটিতে বসে আকাশের দিকে আহাজারি করছেন। পাশে বসেছিলেন রুহুলের মা রাবেয়া বেগম এবং তার বোন রুনা বেগম। রাবেয়া বেগম বারবার বুক চাপড়ে ছেলেকে দেখার আকুতি জানাচ্ছেন। তাঁদের কান্নায় চারপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশী ও স্বজনদের চোখেও পানি। তাঁরা কেউই রুহুলের এমন মৃত্যুর খবরকে মেনে নিতে পারছেন না।

>>>  দাউদকান্দিতে বিদ্যালয়ে গরমে অসুস্থ হয়ে ছাত্রীর মৃত্যু

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :