ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রেফারি কেনার অভিযোগে বড় শাস্তি পেতে যাচ্ছে বার্সা

দৈনিক স্লোগান, খেলাধূলা

বহু সমার্থকের মনে এখন  একটাই প্রশ্ন, বার্সার কি তবে জুভেন্টাসের মতো পয়েন্ট কাটা যাবে নাকি অবনমিত হয়ে তারা একেবারের নিচের স্তরেই নেমে যাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে অবশ্য আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

রেফারিকে অর্থ দিয়ে ম্যাচের ফল প্রভাবিত করার দায়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার পর এমন প্রশ্ন ও শঙ্কা এখন বার্সা সমর্থকদের মনে। বার্সেলোনার পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস ক্লাবটির বিরুদ্ধে এরই মধ্যে অভিযোগপত্র এনেছে। কিন্তু মামলাটি আদালত গ্রহণ করবে কি না, তা জানা যায়নি।

অনেক ‘যদি’ ‘কিন্তু’ থাকলেও পরিস্থিতি এখন আর বার্সার অনুকূলে নেই তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। পাশাপাশি অনেকের প্রশ্ন যে, বার্সারও কি তবে জুভেন্টাসের মতো পয়েন্ট কাটা যাবে নাকি অবনমিত হয়ে তারা একেবারের নিচের স্তরেই নেমে যাবে? সবকিছুর সমাধান জানতে আরেকটু সময় অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু  বার্সা এখন যে চাপে আছে তা নিস্বন্দেহে বলা যায় । এমনকি অনেক কিছু তাদের নিজেদের হাতেও নেই।

মাঠের খেলায় বার্সা যখন জ্বলে ওঠছিলো ঠিক, তখনই এই অভিযোগটি সামনে আসে। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জানা যায়, জোসেফ মারিয়া বার্তেমেউ সভাপতি থাকাকালে পরামর্শের জন্য তৎকালীন লা লিগার রেফারিদের টেকনিক্যাল কমিটির সহ-সভাপতি জোসে নেগ্রেরিয়াকে ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ইউরো (১৪ লাখ ইউরো) প্রদান করেছেলো তারা। ২০১৬-১৮ সাল পর্যন্ত তিন বছর ধরে এ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।

বার্সা তাৎক্ষণিকভাবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেয়েছিলো। অর্থ দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিলেও সেটি দ্বারা ম্যাচের ফল প্রভাবিত করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানিয়েছে বার্সা।এমনকি প্রসিকিউটর অফিসে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় নেগ্রেরিয়া ও তাঁর ছেলে অবশ্য বার্সাকে অর্থের বিনিময়ে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। বিশেষ করে রেফারির দায়িত্ব পালনের সময় বার্সাকে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা দেননি বলে জানান নেগ্রেরিয়া।

>>>  টাইব্রেকারে জিতল মেসিরা, প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন মিয়ামি

কিন্তু বার্সা কৃর্তপক্ষ এবং নেগ্রেরিয়ার দাবির সঙ্গে একমত নয় প্রসিকিউটর অফিস। বার্সার সাবেক দুই সভাপতি বার্তেমেউ ও সান্দ্রো রোসেল এবং নেগ্রেরিয়ার বিরুদ্ধে তারা ‘দুর্নীতি’, ‘বিশ্বাস ভঙ্গ’ ও ‘ভুয়া ব্যবসায়িক রেকর্ড’ রাখার অভিযোগ এনেছে। আর এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে বার্সা যে বড় ধরনের বিপদে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য ।
শুধু সর্মথকেরাই নন, অভিযোগ সামনে আসার পর পরিস্থিতি কোন পথে এগুচ্ছে, তা গভীরভাবে অনুসরণ করছে স্প্যানিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং হাইকাউন্সিল ফর স্পোর্টসও (সিএসডি)। প্রয়োজন হলে এ ইস্যুতে সংযুক্ত হবে তারাও।

আর বার্সার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের অধিকারও আছে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের। সম্প্রতি সিএসডির কর্মকর্তা দ্য অ্যাথলেটিককে বলেছেন, ‘এটি এখন প্রসিকিউটরের বিষয়। এ মুহূর্তে আমাদের কাজ হচ্ছে বিচারিক তদন্তের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখানো।’ অন্য দিকে স্প্যানিশ এফএর একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, তারা এখন বার্সার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে না, ততক্ষণ কিছু করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে তারাও।
অন্য দিকে শুরুতে আদালতে বিচারাধীন থাকায় কিছু করার সুযোগ নেই জানালেও পরবর্তী সময়ে নিজের সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস। কদিন আগে তিনি বলেছিলেন, রেফারিকে অর্থ প্রদানের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে না পারলে বার্সার বর্তমান সভাপতি হুয়ান লাপোর্তার পদত্যাগ করা উচিত। এ সময় রেফারিকে কেনার বিষয়টি অস্বীকার করে লাপোর্তা বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার করতে চাই যে বার্সা কখনো রেফারি কেনেনি। বার্সার কখনোই তেমন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কখনোই না।’

রেফারির সঙ্গে স্প্যানিশ ক্লাবগুলোর এমন দহরম-মহরম সম্পর্কের ঘটনা অবশ্য একেবারে নতুন কিছু নয়। ২২০টি ম্যাচ পরিচালনা করা রেফারি কার্লোস মেগিয়া দাভিলা অবসরের পর ২০০৯ সাল থেকে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে কাজ করে আসছে। স্পেনের শীর্ষ ফুটবলে ২৬৩টি ম্যাচ পরিচালনা করা রেফারি ম্যানুয়েল মেজুতা গনসালেস এখন হেতাফের মূল দলের সঙ্গে কাজ করছেন।

>>>  ইরানে ‘সন্ত্রাসী’ হামলায় নিহত ৪ ট্রাফিক পুলিশ

তবে নেগ্রেরিয়ার বিষয়টি ভিন্ন। কারণ, তিনি রেফারি হিসেবে কর্মরত অবস্থায় বার্সার সঙ্গে কাজ করেছিলেন, যা মূলত বার্সাকে জটিল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর খুব সহজে যে বার্সা এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাচ্ছে না, সেটিও একরকম স্পষ্ট।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :