ঢাকা, সোমবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মেট্রোরেলের উদ্বোধনী মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী

দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মঞ্চে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিছুক্ষণ পরেই বিদ্যুৎ চালিত মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হবে। বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী মঞ্চে এসেই প্রথমে তিনি উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। এরপর মোনাজাত করে দোয়া করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতি করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিকী, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিপুচি তমোহিদে।

আসনে বসার আগে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চের সবদিকে ঘুরে সামনে থাকা জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।

অনুস্ঠানে সরকারের মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, সুধীজনসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন।

মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর টিকিট কেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রো ট্রেনের যাত্রা করবেন। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে ট্রেন ২০০ জন সফর সঙ্গী হবেন। সেখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, মুক্তিযোদ্ধা, গার্মেন্টস কর্মী, মসজিদের ইমামসহ আরো অনেকেই ট্রেনে যাত্রা করবেন বলে জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী উত্তরায় সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সবুজ সংকেত দিলে তাকেসহ অতিথিদের আগারগাঁও নিয়ে মেট্রোরেল।

যানজটের নগরী হিসেবে পরিচিত রাজধানী ঢাকাকে আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার আওতায় আনার পরিকল্পনা থেকে নেয়া মেট্রোরেল প্রকল্পের একটি অংশ চালু হওয়ার মাধ্যমে গণপরিবহনব্যবস্থায় ভিন্ন মাত্রা ও গতি যোগ হচ্ছে। মেট্রোর একাংশ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার উড়াল পথ বুধবার খুলে দেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে নগরবাসীর জন্যও উন্মুক্ত হবে স্বপ্নের এই গণপরিবহনব্যবস্থা। সাধারণ মানুষ মুখিয়ে আছেন মেট্রোরেলে একবার ওঠার জন্য।

>>>  ডেঙ্গু কমাতে এক কোটি মশারি বিতরণের দাবি সংসদে

নগরবাসীর নতুন স্বপ্ন মেট্রোরেলে আপাতত উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সেবা মিলবে। এতেই খুশি এসব এলাকার যাত্রীরা।

মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনে ছয়টি কোচ থাকছে। এর মধ্যে দুই প্রান্তের দুটি কোচকে বলা হয় ট্রেইলর কার। এতে থাকবেন চালক। মাঝখানের চারটি কোচ হচ্ছে মোটর কার। মাঝের ৪টি কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন এবং ট্রেইলার কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন যেতে পারবেন। সাড়ে ৯ ফুট চওড়া কোচগুলোর মধ্যে দাঁড়িয়েও যাত্রীরা যাত্রা করতে পারবেন। ট্রেনের কোচগুলো এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে স্টেশনে থামার পর মেঝে একেবারে প্ল্যাটফর্মের সমতলে থাকে। এতে যাত্রীরা সহজেই হেঁটে ট্রেনে উঠতে পারবেন। কোচের দুই পাশে আছে দুটি দরজা। তবে পুরোদমে চালুর পরে এমআরটি লাইন-৬ ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে ৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। ৬টি কোচ-সংবলিত প্রতিটি একমুখী মেট্রো ট্রেন প্রতিবারে ৩৮ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে থেমে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের জন্য মেট্রোরেলে কোনো হাফ ভাড়া থাকছে না। কারণ মেট্রোরেলে যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা খরচের ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কম। এ ছাড়া যারা স্থায়ী কার্ড কিনে যাতায়াত করবেন, তাদের জন্য ১০ শতাংশ ছাড় আছে। মুক্তিযোদ্ধারা বিনা মূল্যে যাতায়াত করতে পারবেন। পঙ্গুদের জন্য ছাড় আছে। এসব কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা করে হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা নেই মেট্রোরেলে।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও মেট্রোরেল চালুর পর দিন থেকে মেট্রোরেল চলবে দিনে চার ঘণ্টা। সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। এ সময় ট্রেন মাঝপথে কোথাও দাঁড়াবে না। তবে আগামী ২৬ মার্চের পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পুরোদমে চলবে মেট্রোরেল।

৯টি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া হবে বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক জানিয়েছেন।

>>>  ৭০ শতাংশ মানুষ নৌকায় ভোট দিতে উদগ্রীব : সেতুমন্ত্রী

উত্তরা থেকে আগারগাঁও চালু হওয়ার পর মতিঝিল পর্যন্ত চলবে ২০২৩ সালে এবং মতিঝিল ছাড়িয়ে মেট্রোরেলের পুরো রুট ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার কমলাপুর পর্যন্ত ২০২৫ সালে চালু হতে পারে। যদিও ২০২৪ সালে শেষ করার সময় নির্ধারণ করা ছিল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

সর্বশেষ

এই বিভাগের সর্বশেষ

সর্বশেষ :